বাশারের শত্রু–মিত্ররা

সিরিয়ার পরিস্থিতি, তথা দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতায় রাখা না-রাখা নিয়ে বিশ্ব পরাশক্তি ও প্রতিবেশী দেশগুলো বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র: সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট বাশারকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে মধ্যপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তাও দিচ্ছে ওয়াশিংটন। আইএস দমনে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সিরিয়ায় হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট। তবে চলমান সংকটের সমাধানে আলোচনা প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পক্ষে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রয়েছে সিরিয়ার প্রতিবেশী তুরস্ক ও সৌদি আরব। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিও আইএসবিরোধী মার্কিন অভিযানকে সঠিক বলে মনে করে।
রাশিয়া: প্রেসিডেন্ট বাশারের অন্যতম মিত্র রাশিয়া। মস্কো নানাভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে বাশার বাহিনীকে। আইএসবিরোধী অভিযানের নামে সিরিয়ায় হামলা শুরু করে রাশিয়া। যদিও যুক্তরাষ্ট্র জোট অভিযোগ করছে, মস্কো আইএসের বিরুদ্ধে নয়, অধিকাংশ হামলা চালাচ্ছে বাশারবিরোধী বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে।
প্রেসিডেন্ট বাশার ও রাশিয়ার অবস্থানকে জোর সমর্থন দিচ্ছে ইরান। ওই অঞ্চলে ইরান বাদে বাশারকে সমর্থন দিচ্ছে শুধু লেবাননের কট্টরপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
রাশিয়ার কঠোর সমালোচনা ন্যাটোর
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো তুরস্ককে সহায়তার জন্য দেশটিতে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে। সিরিয়ায় বোমা হামলাকারী রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো তুর্কি আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দেয়। খবর রয়টার্সের।
সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গতকাল এক বৈঠকে বসেন। জোটের মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ ওই বৈঠকের আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো হুমকির বিরুদ্ধে তুরস্কসহ জোটের সব সদস্যকে রক্ষার জন্য ন্যাটোর সামর্থ্য ও প্রস্তুতি রয়েছে। সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা উদ্বেগজনক। এ অভিযানের কারণে সিরিয়ায় সংকটের তীব্রতা বরং বেড়েছে। বিষয়টির রাজনৈতিক সমাধান হওয়া উচিত।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সহায়তা বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্টলটেনবার্গ। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন গতকাল বলেন, সিরিয়ার গুরুতর পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলছে রাশিয়া।
আসাদবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের লোকজনকে লক্ষ্য করে সিরিয়ায় রুশ হামলা হচ্ছে বলে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ। তবে মস্কো তা অস্বীকার করে বলছে, তারা মূলত ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের বিভিন্ন অবস্থানের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.