‘উনি সবকিছুতে নাটক করছেন’ -প্রধানমন্ত্রী, খালেদার ওপর হামলা হয়নি -স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

কাওরান বাজারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনাকে ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় তিনি বলেছেন, উনি সব কিছুতে নাটক করছেন। ৯১ দিন অফিসে বসে বোমা ককটেল মেরে, বাস পুড়িয়ে মানুষের জীবনে অশান্তি  সৃষ্টি করেছেন। মানুষের জীবনকে স্থবির করে দিয়েছিলেন। যখন শান্তি এসেছে, মানুষকে আবার যন্ত্রণা দিতে তিনি মাঠে নেমেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তখনই তিনি নাটক সৃষ্টি করছেন। তার সিকিউরিটি ফোর্স বিনা উস্কানিতে গুলি চালায়। আপনার নিরাপত্তা কর্মীদের ঠেকান। মানুষের জানমাল নিয়ে আর যেন খেলা না হয়। ৯১ দিন অনেক যন্ত্রণা দিয়েছেন, আর অশান্তি সৃষ্টি করবেন না। অশান্তি বেগমের অশান্তি বাংলাদেশের মানুষ আর চায় না। তিনি বলেন, তার কাছে নিশ্চয়ই সার্ভে আছে, তার জেতা সম্ভব নয়। সেই জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন, পরিবেশ নষ্ট করছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় থাকতে আইভি রহমানকে হত্যা করেছেন। আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। রাস্তায় নেমেই আবার জনগণের জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করেছেন। এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। নাটক সৃষ্টি না করে দেশের মানুষকে শান্তি দেন। মাগুরা-১ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে গণভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। সভার শুরুতেই তিনি বক্তব্য রাখেন।
খালেদার ওপর হামলা হয়নি -স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হামলার মুখে পড়লেও তার ওপর হামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি মানবজমিনের কাছে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনার আগে আরও কিছু ঘটনা ঘটেছে। খালেদা জিয়া যখন কাওরান বাজারে যান তখন কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা তাকে কালো পতাকা প্রদর্শন করেন। কারণ, খালেদা জিয়ার তিন মাসের অবরোধ-হরতালের কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দলীয় কিছু লোকও ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা (সিএসএফ) ২-৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড প্রেসিডেন্টকে কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সিএসএফ সদস্যরা। এ সময় তাকে বাঁচাতে অন্যরা এগিয়ে গেলে এই ঘটনা ঘটে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিএসএফ সদস্যরা তাদের লাঠিপেটা করতে থাকে। এতে একজনের আঙুল ভেঙে গেছে। একজনের পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি তুলে দেয়া হয়েছে। এরপর স্থানীয় সাধারণ মানুষ ক্ষেপে গিয়ে সিএসএফ সদস্যদের ওপর হামলা করে। খালেদা জিয়ার ওপর হামলা করেনি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সাত জন আহত হয়েছে। তাদের ফার্মগেটের আল-রাজী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এটি যেহেতু আমার নির্বাচনী এলাকা, আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।
উল্লেখ্য, গতকাল বিকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নেমে হামলার মুখে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। এ সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বেশ কয়েকজন যুবক তাকে জুতা ও কালো পতাকা দেখান। হামলাকারীরা খালেদা জিয়ার গাড়িতেও ঢিল ছোড়েন। এতে তার গাড়ির ডান পাশের কাঁচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এলোপাতাড়ি ভাঙচুর করা হয় তার নিরাপত্তাকর্মীদের (সিএসএফ) তিন-চারটি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি। এতে খালেদার একজন নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজন আহত হন। তার গাড়ির সামনের অংশে রক্তের দাগও দেখা গেছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘটনাটি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।

No comments

Powered by Blogger.