জোটগত নির্বাচন নিয়ে ১৪ দলে অনৈক্য

আগারগাঁওয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল মনোনয়নপত্র দাখিল
করেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক (বাঁ থেকে), বিএনপির
নেতা আবদুল আউয়ালের পক্ষে তাঁর ছেলে তাফসির আউয়াল এবং আওয়ামী
লীগের সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরী l ছবি: প্রথম আলো
গুলিস্তান এলাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল
মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন,
বিএনপির নেতা আবদুস সালামের পক্ষে তাঁর স্ত্রী ফাতেমা সালাম এবং বিএনপির
নেতা মির্জা আব্বাসের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মো. শাহজাহান l ছবি: প্রথম আলো
জোটগতভাবে নির্বাচন করা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসায় জোটগত প্রার্থী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন জোট। ১৪ দলের সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়র পদে ১৪ দলের একক প্রার্থী দেওয়া হবে। ১৪ দলের আগামীকালের বৈঠক থেকে এ ঘোষণা আসবে। জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ মেয়র পদে জোটগত প্রার্থী দিতে চাইলেও অন্য শরিক জাসদ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা চায়। জাসদের পক্ষে ঢাকা দক্ষিণে নাদের চৌধুরী এবং উত্তরে শহীদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জানতে চাইলে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের কাছে কখনো সমর্থন চায়নি। তা ছাড়া স্থানীয় নির্বাচন সব সময় উন্মুক্ত হয়। এ নির্বাচনে জাসদ-সমর্থিত প্রার্থী থাকবে।’ ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাসদ ছাড়া অন্য দলগুলো আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই সমর্থন দেবে। তবে তারা কয়েকটি কাউন্সিলর পদ চাইতে পারে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জোটগতভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই সমর্থন করব। তবে আমরা কিছু কাউন্সিলর পদ চাইব।’ একইভাবে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, তাঁরা একটি কাউন্সিলর পদ চাইবেন। আর মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকেই সমর্থন দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের অস্বস্তি: ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সমর্থন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলে অস্বস্তি কাটেনি। তবে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে দল-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা নিয়ে দৃশ্যমান কোন্দল নেই। সব পক্ষ প্রকাশ্যেই দল-সমর্থিত প্রার্থীর হয়ে কাজ করছেন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের ১০-১২ জন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই সিটিতে প্রার্থী নিয়ে অস্বস্তির মূল কারণ হচ্ছে, দল-সমর্থিত দুই প্রার্থীর কেউই মহানগরের নেতা-কর্মীদের এখনো সেভাবে আস্থায় নিতে পারেননি। উত্তরের প্রার্থী আনিসুল হক সব নেতাকে চেনেনও না। স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গেও তাঁর তেমন যোগাযোগ নেই। আর সাঈদ খোকন সবাইকে কাছে টানার চেষ্টায় এখনো সফল হননি। মহানগরের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের প্রতি আস্থাশীল। সাঈদ খোকন গত শনিবার মোফাজ্জল হোসেনের বাসভবনে গিয়ে তাঁর দোয়া চেয়েছেন। দলীয় নির্দেশে ঢাকা উত্তরে কামাল মজুমদার প্রার্থী না হলেও আনিসুল হক তাঁর সমর্থন এখনো আদায় করতে পারেননি।

No comments

Powered by Blogger.