হেলিকপ্টারে চড়ে খুলনায় ছাত্রলীগের সভাপতি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল রোববার হেলিকপ্টারে চড়ে খুলনার কয়রা উপজেলায় যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান। সেখানে তিনি স্থানীয় বিএনপির এক নেতার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করেন। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতারা। কয়রা থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে চড়ে কয়রায় পৌঁছান বদিউজ্জামান। বেলা তিনটার দিকে হেলিকপ্টারে করেই তিনি ঢাকায় ফেরেন।
কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাহারুল ইসলাম জানান, ছাত্রলীগের সভাপতি মহারাজপুর ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামে জাকারিয়া শিক্ষানিকেতন নামের একটি বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। স্কুলের অনুষ্ঠান শেষে সেখানেই তিনি ছাত্রলীগের একটি কর্মিসভায় অংশ নেন।
জানা গেছে, অনুষ্ঠান শেষে বদিউজ্জামান দুপুরের খাওয়াদাওয়া করেন গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামানের বাড়িতে। তিনি কয়রা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির সহসমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তাঁর বড় ভাই মোফাজ্জেল হোসেন এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাঁদের আরেক ভাই আবদুল্লাহ আল মাহমুদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মাহমুদ ছাত্রলীগ করতেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তিনিই তাঁকে ওই অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিলেন। মাহমুদের ভাইদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
হেলিকপ্টারে করে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘আমাকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে গেছে বলেই হেলিকপ্টারে গিয়েছি। গাড়িতে নিয়ে গেলে গাড়িতেই যেতাম।’
তবে আবদুল্লাহ আল মাহমুদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মহসীন রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রাজনীতি করছি। কিন্তু মোফাজ্জেলের ভাই মাহমুদ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন কিংবা করেন, এ রকম কখনো শুনিনি।’
মহসীন রেজা বলেন, ‘তিনি (বদিউজ্জামান) হয়তো বলবেন তাঁর এই সফর ব্যক্তিগত। এ জন্য তাঁর এই সফর সম্পর্কে আমাদের তিনি কিছু জানাননি। কিন্তু তিনি যখন তাঁর এই সফরের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগকে যুক্ত করেন, তখন সেটি আর ব্যক্তিগত বিষয় হয়ে থাকে না। সেখানে দলীয় প্রশ্ন এসেই যায়। তাই আমি বলব, এ কাজটি তিনি ঠিক করেননি।’
কয়রা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মতিউর রহমানও মাহমুদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষের কারও বাড়িতে কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি অংশ নিচ্ছেন, এটা আমরা ভাবতে পারি না।’

No comments

Powered by Blogger.