ধন্যবাদ লি, বিদায়, ভালো থেকো!

আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার ও প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউকে শেষ বিদায় জানাতে তার সম্মানে এক মিনিটের জন্য থেমে গিয়েছিল পুরো সিঙ্গাপুর। আকাশ থেকে ঝরছিল অঝোর বৃষ্টি। তারই শোকে যেন কাঁদছিল আকাশ। রোববার লি কুয়ানের শেষকৃত্য পালনের মাধ্যমে তাকে সমাহিত করা হয়। বৃষ্টির মুষলধারা সত্ত্বেও এসময় হাজার হাজার মানুষ প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রধান সড়কগুলোতে সুশৃংখলভাবে দাঁড়িয়ে ছিল।
আর চিৎকার করে বলছিল, ‘ধন্যবাদ লি, বিদায়, ভাল থেকো’। ৬০ বছর বয়সী এক প্রবীণ বলেন, তিনি এমনই এক মহৎ মানুষ ছিলেন যে, কেউ তার অভাব পূরণ করতে পারবে না। সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইট টাইমস পত্রিকা জানায়, ইউনিভার্সিটি কালচারাল সেন্টারে লি কুয়ানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান চলাকালে রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়) এক মিনিটের নীরবতা পালন করে দ্বীপরাষ্ট্রটি। এ সময় দেশটির সব ট্রেন কোনো না কোনো স্টেশনে থেমে যায়, এগুলোর দরজা খুলে যায়। দেশটির সবগুলো বাসস্টপও থেমে যায় এক মিনিটের জন্য। সেই সঙ্গে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরেও এ সময় বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম। নীরবতার সময় সব বাস-ট্রেন স্টেশনের ডিজিটাল বোর্ড ও চাঙ্গি বিমানবন্দরের ১৮১টি টেলিভিশনে একযোগে ‘লি কুয়ানের জন্য এক মিনিটের নীরবতা’ লেখা জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠে। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা) পার্লামেন্ট হাউস থেকে লি কুয়ানের কফিন ইউনিভার্সিটি কালচারাল সেন্টারের উদ্দেশে রওনা হওয়ার মাধ্যমে তার শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ২৫ মার্চ থেকে পার্লামেন্ট হাউসেই তার মরদেহ শায়িত আছে। প্রিয় নেতার প্রতি শেষবারের মতো সম্মান জানাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীতে নামে লাখো মানুষের ঢল। তারা চিৎকার করে বলতে থাকে ‘উই লাভ ইউ, লি কুয়ান ইউ’। লি কুয়ানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাজির হন বিশ্বনেতারাও। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট এতে অংশ নিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.