৩৩ দিনে ক্ষতি ৭৫,০০০ কোটি টাকা- জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় ব্যবসায়ীরা

দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে চলমান সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল দুপুরে সারা দেশে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। হরতাল-অবরোধ বন্ধ করে রাজনীতি অনুসরণ করতে দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। কর্মসূচিতে জানানো হয়, চলমান টানা অবরোধ-হরতালে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাতে এ পর্যন্ত ৭৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনের সামনে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের সব ব্যবসায়ীর পক্ষে স্মারকলিপি পাঠ করেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। কর্মসূচিতে দেশের বর্তমান হিংসাত্মক ও ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি আর চলতে দেয়া যায়না। ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অবিলম্বে উদ্যোগ গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে অবিলম্বে আইন করে হরতাল-অবরোধ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, চলমান টানা হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাতে এ পর্যন্ত ৭৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে পোশাক খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়িক খাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা, কৃষি ও পোলট্রি খাতে ৯ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা, পরিবহন খাতে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, আবাসন খাতে ৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, পর্যটন খাতে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, উৎপাদনশীল খাতে ৪ হাজার কোটি টাকা এবং হিমায়িত পণ্য খাতে ২৫০ কোটি টাকা। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এফবিসিসিআইয়ের আহ্বানে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশের ব্যবসায়ীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মীর নাছির হোসেন, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, এ কে আজাদ, বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ ও সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, আবুল কাশেম আহমদ, মেট্রো চেম্বারের সাবেক সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমানসহ ব্যবসায়ী নেতারা অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। কাজী আকরাম বলেন, প্রকৃতপক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি। চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যার কোন পরিমাপ করা যায় না। তিনি বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই রাজনৈতিক সহিসংতা। দেশের স্বার্থে অর্থনীতির স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাত ও নেতিবাচক কর্মসূচি, বিশেষ করে হরতাল-অবরোধ পরিহার করা জরুরি। আকরাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সব ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ, বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহীতাদের ঋণ পুনর্গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে তা সব ব্যবসায়ীকে দেয়া এবং সহিংসতা ও জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে হবে। কাজী আকরাম বলেন, অবরোধ-হরতালের নামে দেশে এক ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে চলন্ত যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এতে শুধু প্রাণহানির ঘটনাই ঘটছে না, অনেকেই সারা জীবনের জন্য শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে বিশাল ক্ষতির শিকার হচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি। এর অবসান চাই। ব্যবসায়ী নেতা বলেন, চলমান সহিংসতায় ৮৭ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শিশুও রয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে আছে ২০০ জন। এক হাজার গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে, চার হাজার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, এক হাজারের বেশি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে, ১০টি স্থানে রেলে নাশকতা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অফিস-আদালত, ব্যবসা কেন্দ্রে হামলা হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশ নিতে ১১টার পর থেকে ব্যবসায়ীরা যার যার সংগঠনের ব্যানার নিয়ে মতিঝিলে জড়ো হতে থাকেন। তারা দৈনিক বাংলা মোড় থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডারের পাশে অবস্থান নেন। এ সময় তাদের হাতে দেখা যায় ছোট ছোট জাতীয় পতাকা। কণ্ঠে ছিল জাতীয় সংগীত। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল- ‘সবার উপরে দেশ, দেশ বাঁচাও, অর্থনীতি বাঁচাও’; ‘জানমালের নিরাপত্তা চাই, ব্যবসার পরিবেশ চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান। ঠিক ১২টায় এফবিসিসিআই ভবনের সামনে বসানো মঞ্চ থেকে মাইকে বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। ব্যবসায়ীরা এ সময় হাতের পতাকা তুলে ধরে কণ্ঠ মেলান- ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।’ দেশের ৭৪টি চেম্বার ও ৩৬৯টি ব্যবসায়ী সমিতি টেকনাফ থেকে  তেঁতুলিয়া পর্যন্ত একযোগে এ কর্মসূচি পালন করে বলে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংগঠনটির সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, সারা দেশে প্রায় ৫০ লাখ ব্যবসায়ী কর্মসূচি পালন করেছে। তারা সবাই দেশে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। এর পরও পরিস্থিতি উন্নতি না হলে দুই নেত্রী ও প্রেসিডেন্টের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে একই সময়ে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা হাতে রাজপথে মানববন্ধন করেন তৈরী পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের এ কর্মসূচিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কাওরানবাজারের আড়ৎদার, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, হরতাল অবরোধের মতো বিধ্বংসী কর্মসূচি দেখতে চাই না। শান্তি চাই, সরকারের কাছে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিরাপত্তা চাই। হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনীতির রক্ত ঝরছে।
এর আগে হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে ২০১৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর ব্যবসায়ীরা সারা দেশে সাদা পতাকা হাতে মানববন্ধন করেছিলেন, যদিও সে সময় তাদের আহ্বানে সাড়া দেননি রাজনৈতিক নেতারা। গত ১লা ফেব্রুয়ারি আবারও একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে কাজী আকরাম জানান, পতাকা হাতে মানববন্ধনের পর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তারা প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেবেন। গত ১০ই জানুয়ারি কাজী আকরাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সংলাপের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। এবার আর কোন উদ্যোগ নেয়া হবে না। সম্ভব হলে তারা আইনি পদপেক্ষ নেবেন।
সারা দেশের ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
চলমান অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছে সাড়া দেশের ব্যবসায়ীরা। বিস্তারিত রয়েছে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে-
সিলেট অফিস জানায়, চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সিলেটের রাজপথে নেমে এসেছিলেন সব অংশের ব্যবসায়ীরা। দুপুরে নগরীর চেম্বার ভবন ও আনন্দ টাওয়ারের সামনে দুটি চেম্বারের নেতারা ব্যবসায়ীদের নিয়ে চলমান অচলাবস্থা নিরসন করে দেশ সচলের দাবি জানিয়েছেন। এ সময় তারা বলেন, বর্তমানে দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের এ সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিগত এক মাসের অধিক সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা ব্যাংক লোন গ্রহণ করে ও নিজস্ব পুঁজি খাটিয়ে সরকারের ভ্যাট, ট্যাক্স আদায় করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে থাকেন। ব্যবসায়ীদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত  করে কখনই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দুপুর ১২টায় চেম্বার ভবনের সামনে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ১৫ মিনিট ব্যাপী মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। অবস্থান কর্মসূচিতে ব্যবসায়ীরা জাতীয় পতাকা ও ‘সবার উপরে দেশ, দেশ বাঁচাও, অর্থনীতি বাঁচাও’ স্লোগান সংবলিত ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে চেম্বার বিল্ডিংয়ের সম্মুখে উপস্থিত হন। সিলেট চেম্বারের সভাপতি সালাহ্‌ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, ব্যবসায়ীদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কখনই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। রোববার দুপুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা হাতে জেলরোডস্থ আনন্দ টাওয়ারের সামনে মেইন রোডে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন পালন করা হয়। কর্মসূচিতে ‘সবার উপরে দেশ, দেশ বাঁচাও, অর্থনীতি বাঁচাও’-স্লোগান সংবলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, হরতাল-অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। গতকাল দুপুরে ‘সবার উপরে দেশ, দেশ বাঁচাও, অর্থনীতি বাঁচাও’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। হরতাল-অবরোধের প্রতিবাদে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। চট্টগ্রাম চেম্বার ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বারবিডা, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেইড ফরওয়াডার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন অংশ নিয়েছে। ১৫ মিনিটের অবস্থান কর্মসূচিতে ব্যবসায়ীরা অর্থনীতি বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশ ও দেশের অর্থনীতি বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড দেশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী সমাজ মেনে নেবে না।   দেশ ও দেশের মানুষকে ধ্বংস করে সুস্থ রাজনীতি হতে পারে না। পুড়িয়ে মানুষ হত্যা আর পণ্যবাহী গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার রাজনীতিকে আমরা সমর্থন দিতে পারি না। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, সময়মতো পণ্য পৌঁছছে না। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। আমাদের সুষ্ঠু পরিবেশ দিন, দেশ বাঁচান।
 স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান: গতকাল দুপুর ১২টায় হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কার্যালয়ের সামনে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ব্যাংকসসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ চেম্বার প্রেসিডেন্ট মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামীম, আতাউর রহমান সেলিম, মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাংগঠনিক আহাদ মিয়া, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শাহবাজ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তোফায়েল ইসলাম কামাল, ব্যবসায়ী দুলাল সূত্রধর, আহমেদ কবির আজাদ প্রমুখ। বক্তারা দেশের অর্থনীতি রক্ষায় অবরোধ, হরতাল ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি বন্ধের দাবি জানান।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে  জানান: জাতীয় পতাকা হাতে দেশ বাঁচাও, অর্থনীতি বাঁচাও স্লোগান নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হরতাল-অবরোধের মতো  ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। রোববার দুপুর ১২টায় শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিকেএমইএর ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে গলাচিপা মোড় পর্যন্ত ১৫ মিনিটের এ মানববন্ধনে জাতীয়ভিত্তিক ৭টি ও জেলাভিত্তিক ৩৩টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড  ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দরা অংশ নেন। বিকেএমইএ এর সাবেক সভাপতি এবং এনসিসিআই এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মঞ্জুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিকেএমইএ এর সহসভাপতি জি. এম. ফারুক।
সমাবেশে ব্যবসায়ী নেতারা দেশের অর্থনীতির স্বার্থে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান।
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান: বিজিএমইএ’র কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের আশুলিয়ায় সাদা পতাকা হাতে নিয়ে মানববন্ধন করেছে কয়েকশ’ পোশাক শ্রমিক। রোববার দুপুরে কলমা-আশুলিয়া সড়কের খেজুরবাগান এলাকায় রেডিয়্যান্স গার্মেন্ট সামনে কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় সাদা পতাকা হাতে নিয়ে মানববন্ধনে রেডিয়্যান্স গার্মেন্টের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার প্রশাসন শামিম রেজা বলেন, সারা দেশে হরতাল -অবরোধ দিয়ে গার্মেন্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গার্মেন্ট খাত এজন্য সরকারের কাছে হরতাল-অবরোধ বন্ধেরও দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে, জামগড়া ফ্যান্টাসী কিংডমের সামনে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মানববন্ধন করেছে। এ সময় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের সদস্য আলহাজ আবু শহীদ ভূঁইয়া, সা’দাতিয়া সোয়েটার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহারার চৌধুরী, লিন্ডা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিম, ন্যাচারাল গ্রুপের মুনসুর আলম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন ভূঁইয়া, সমির প্লাজা শপিং কমপ্লেক্সের কো-অর্ডিনেটর নজরুল ইসলামসহ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

No comments

Powered by Blogger.