গৃহবন্দিত্বে শুরু সাজার ঝুঁকিতে শেষ by কাফি কামাল

২০১৪ সালের প্রথম দিনটি গৃহবন্দি অবস্থায় শুরু হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তিনি পড়েছিলেন গৃহবন্দিত্বের মুখে। গেটের দু’পাশে বালুভর্তি ট্রাক দাঁড় করিয়ে ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করে অঘোষিত গৃহবন্দিত্বের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল সরকার। ২৭শে ডিসেম্বর রাত থেকে রীতিমতো নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া। দলের নেতাকর্মীরা তো বটে, তার আত্মীয়-স্বজনরাও গুলশান ২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ‘ফিরোজা’মুখী হতে পারেননি। এমনকি আইনজীবী, বিদেশী সাংবাদিকরাও নন। সামনের দিকে রাশিয়ান দূতাবাসের উঁচু দেয়াল। দু’পাশে বালিভর্তি ট্রাক। কয়েক স্তরে অবস্থান নিয়ে সতর্ক প্রহরায় ছিল র‌্যাব-পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু বছরের প্রথম সপ্তাহেই তার সামনে ছিল বড় এক চ্যালেঞ্জ। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহতের চ্যালেঞ্জ। এক পর্যায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই তাকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে নির্বাচন প্রতিহতের ডাক দেন। বাংলাদেশে বিরোধী নেতার অবরুদ্ধ বাসভবনের চিত্র ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। দি ইকোনমিস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ‘বাংলাদেশী গণতন্ত্রের নমুনা ৭৯ গুলশান’। তবে প্রথম থেকেই সরকারের তরফে বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে এ ব্যবস্থা। তবে গৃহবন্দিত্ব তেমন প্রভাব ফেলেনি খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত জীবনে। তিনি অন্যান্য সময়ের মতোই দিনযাপন করেছেন। বিশেষ করে ২৯শে ডিসেম্বর ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে সরকারের কঠোর অবস্থান ও রাজধানীর নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় তৃণমূলে যে হতাশা নেমে আসে অবরুদ্ধ থেকেও তা কাটানোর চেষ্টা করেন খালেদা জিয়া। বিএনপির জেলা নেতাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন ফোনে। রাজপথে থেকে প্রতিহত করতে না পারলেও সার্বিক পরিস্থিতিতে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যায়নি বেশির ভাগ ভোটার। এদিকে নির্বাচনের পরদিন ৬ই জানুয়ারি জার্মান রাষ্ট্রদূত আলবার্ট কোনৎসে ও ৭ই জানুয়ারি কানাডিয়ান হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেন প্রথম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। হিদার ক্রুডেনের সাক্ষাতের পর অবরোধ শিথিল করা হয়। ৮ই জানুয়ারি তুলে নেয়া হয় খালেদা জিয়ার প্রটোকল। ৫ই জানুয়ারির পর খালেদা জিয়া ফেরত দেন বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে ব্যবহৃত তার দু’টি সরকারি গাড়ি। ১৫ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর ১১ই জানুয়ারি তিনি গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। এদিকে সারা দেশ সফরের মাধ্যমে ২০১৩ সালে আন্দোলনের পক্ষে মতামত তুঙ্গে নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতিতে দৃশ্যমানভাবে সে আন্দোলন সফলতার মুখ দেখেনি। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর রাজপথের আন্দোলন থেকে সরে এসেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল। এতে সারা দেশে হতাশাগ্রস্ত ও দ্বিধান্বিত নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা ও জনমত ধরে রাখতে ২০১৪ সালে ফের একের পর এক জেলা সফর করেছেন তিনি। ২রা মার্চ রাজবাড়ি সফরের মাধ্যমে শুরু হয় দ্বিতীয় দফা এ সফর। এরপর ১৪ই মে নারায়ণগঞ্জ, ২৮শে মে মুন্সীগঞ্জ, ২২শে জুন জয়পুরহাট, ২৪শে সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৮শে সেপ্টেম্বর জামালপুর, ২৪শে অক্টোবর নীলফামারী, ২রা নভেম্বর নাটোর, ১৩ই নভেম্বর কিশোরগঞ্জ, ২৯শে নভেম্বর কুমিল্লা, ১৩ই ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ ও ২৭শে ডিসেম্বর গাজীপুরে ২০দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন তিনি। এসব জনসভায় তিনি বর্তমান সরকারকে অবৈধ হিসেবে দাবি করে কড়া সমালোচনা করেন। পাশাপাশি সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বারবার সংলাপের তাগিদ দেন। আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দমন-পীড়নের সমালোচনা করে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরাসরি গুলি বন্ধ করুন; আন্দোলন দেখিয়ে দেবো। সরকারকে বিদায় করেই ঘরে ফিরবো। এমনকি কিশোরগঞ্জের জনসভায় তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, অত্যাচার বাড়লে ঢাল-তলোয়ার নিয়ে প্রস্তুত হোন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবের হাতে খুনের শিকার ৭ জনের পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে কমিশনার নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারের বাসায় যান। তবে বছরের মধ্যভাগে নারায়ণগঞ্জে শহরে খালেদা জিয়া একটি জনসভা করতে চাইলেও অনুমতি মেলেনি। সারা দেশে গুমের শিকার নেতাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন ও সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে আয়োজিত সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি।ওই দু’টি অনুষ্ঠানেই প্রধান অতিথি ছিলেন খালেদা জিয়া। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সফরের সময় সার্কিট হাউজ ব্যবহার নিয়ে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েন তিনি। এদিকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জনসভা এবং মতবিনিময় সভায় দেয়া বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দেন। গুম-খুনের ঘটনায় র‌্যাবের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তুলে ধরে এককালে নিজের সরকারের গড়া এ সংস্থাটিতে বিলুপ্তির দাবি তুলেন তিনি। নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সমালোচনা এবং প্রতিষ্ঠান দু’টির পুনর্গঠন দাবি করেন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের নানা অনিয়ম, ভোটারদের অনুপস্থিতির চিত্র, গুম-খুনসহ বিরোধী দল নির্যাতনের চিত্র, ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির পরিমাণসহ তথ্য তুলে ধরেন। বছরের প্রথম থেকেই সরকার বিরোধী আন্দোলনের তিনটি টাইমফ্রেম ঘোষণা করেন তিনি। তবে প্রতিবারই সে টাইমফ্রেম থেকে সরে আসেন তিনি। সরকারের প্রতি বারবার আলোচনার আহ্বান জানান। তবে বছরের শেষ দিকে এসে তিনি চূড়ান্ত আন্দোলনের যেতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার প্রতি জোর দিয়েছেন তার বক্তব্যে। ২১শে ডিসেম্বর রাজধানীতে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি পরিষ্কার বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ন্যায়সঙ্গত। আজ সে ন্যায়সঙ্গত বিদ্রোহ সংগঠিত করার সময় এসেছে। বিজয়ের মাসে সে প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন করতে হবে। ওদিকে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সফররত ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ না করায় দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন খালেদা জিয়া। দলীয় ফোরামেও বিষয়টি ভুল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০১৪ সালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফরে প্রতিনিধি দল নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এভাবে বছরজুড়েই বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নিয়মিত বৈঠক করেছেন তিনি। বিশেষ করে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সফররত উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের বেশির ভাগই তিনি ওয়ান টু ওয়ান কথা বলেছেন। সেই সব বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। রাজপথের আন্দোলনে না থাকলেও বছরের মধ্যভাগে ইফতার রাজনীতির মাধ্যমে জোটের, দুই জোটের বাইরে থাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের উদ্যোগ নেয় বিএনপি। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই সে উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন। এছাড়া বছরের শেষভাবে জোটের শরিক দল, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও বিএনপিপন্থি স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে তিনি সংশ্লিষ্টদের নানা প্রস্তাবনা পরামর্শ নেয়ার পাশাপাশি তাদের আন্দোলনের নির্দেশনা দেন। বিশেষ করে আগামীদিনের আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সতর্ক করে দেন। চলতি বছর তিনবার বিদেশ সফর করেছেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে দু’বার চিকিৎসার উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ও একবার ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব। তবে সৌদি আরব সফরের সময় সেখানে আসেন লন্ডনে অবস্থানরত তার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দলের ও দেশের রাজনীতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনার করেন। সৌদি আরবে তাদের এ সাক্ষাতের পর লন্ডনে নানা অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে পুরোমাত্রায় সক্রিয় হন তারেক রহমান। এদিকে ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ওয়ান ইলেভেনের অস্বাভাবিক সরকারের সময়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল কয়েকটি দুর্নীতি মামলা। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলা দুইটির চার্জ গঠন করা হয়। সেগুলো বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয় পুরান ঢাকার বকশী বাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আইনি লড়াই করে বিএনপি। ২০০৮ সালের পর ২০১৪ সালেই একাধিকবার নিম্ন ও বিশেষ আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হয় বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়াকে। বিশেষ আদালতে তার হাজিরাকে কেন্দ্র করে বছরের প্রথম বারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি নেতারা। ট্রাস্টের মামলা দু’টি বিশেষ আদালতে স্থানান্তর, সে আদালতের বিচারক নিয়োগ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট, লিভ টু আপিল করেও সুফল পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। এই মামলা দু’টির বিচারে সরকার তাড়াহুড়ো করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির আইনীজীবীরা। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতাদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাইছে সরকার। তবে বছরের শেষ দিকে নাটকীয়ভাবে ট্রাস্ট মামলার বিচারক পরিবর্তন করে সরকার। ২০শে সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন বিশৃঙ্খলা হলে খালেদা জিয়াকেও গ্রেপ্তার করা হবে।’ তার এ বক্তব্যের মধ্যেই সরকারকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আইনি বেড়াজালে আটকাতে চাইছে তার একটি ইঙ্গিত পান দলের নেতারা। এমন প্রেক্ষিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না তাদের বক্তব্যে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক মহলে এমন আলোচনাও শোনা গেছে, ট্রাস্ট মামলায় সাজা দেয়া হলেও আইনের মারপ্যাঁচে তাকে গৃহবন্দিই রাখা হবে। তারপর চলবে দেনদরবার। এদিকে ২৩শে সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনসভায় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘গ্রেপ্তারে ভয় পাই না, নিজেরা পালানোর পথ পরিষ্কার রাখুন।’ তবে বছরের দ্বিতীয়ভাবে বেশির ভাগ বক্তব্যেই খালেদা জিয়া বিচার বিভাগের সমালোচনার পাশাপাশি বিচারকদের প্রতি মামলার যথার্থতা দেখে ও বিবেকের বিচারে রায় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গৃহবন্দিত্ব দিয়ে শুরুর পর বিশেষ আদালতে দুর্নীতির মামলায় সাজার ঝুঁকি নিয়ে শেষ হয়েছে খালেদা জিয়ার ২০১৪ সাল।

No comments

Powered by Blogger.