৪ ঘণ্টা পর নড়ে উঠল লাশ

অজ্ঞাত এক নারী। দুপুর ২টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। মৃত্যুর সনদও লেখা শেষ। ডোম মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছিলেন লাশঘরে। এ সময় ট্রলিতে হঠাৎ নড়ে ওঠে মৃতদেহ। মৃত ঘোষণার ৪ ঘণ্টা পর লাশ জীবিত হওয়ার এই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খোদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাগানে অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন ৪৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত ওই নারী। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে তাকে দেখতে পান। পরিচালক নিজেই ওই নারীকে তুলে নিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ভর্তি করান নতুন ভবনের ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর ইউনিটে। ২ দিনের চিকিৎসায় ওই নারীর শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অজ্ঞাত এই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর সনদও লিখে দিয়েছেন তারা। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে লাশের কাগজপত্র হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যান ৮০২ নম্বর ওয়ার্ড বয় বেলাল হোসেন। তিনি মর্গ সহকারী নূরে আলমের কাছে মৃত্যুর সনদ জমা দেন। নূরে আলম মৃত্যুর সনদ পাওয়ার পর মর্গে লাশ এনে ময়নাতদন্তের জন্য ডোম আবদুল আজিজকে পাঠান। আজিজ লাশ ট্রলিতে তোলার পর সেটি নড়ে ওঠে। তিনি চিৎকার দিয়ে ডাক্তার ডাকেন। ডাক্তার এসে ওই নারীকে পুনরায় ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে স্যালাইন দেন।
অজ্ঞাত ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন এক নারী চিকিৎসক। তিনি নাম প্রকাশ না করে বলেন, আসলে আমরা যখন তাকে মৃত ঘোষণা করেছি, তখন তার হৃদকম্পন বা শারীরিক কোনো সচলতা ছিল না, রক্ত চলাচলও পাওয়া যায়নি। চরম অপুষ্টির কারণে ওই রোগীর এই অবস্থা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
৪ ঘণ্টা পর লাশ বেঁচে ওঠা সম্পর্কে জানতে চাইল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে অজ্ঞাত নারীকে বাগানে অচেতন অবস্থায় পাওয়ার পর তিনি নিজে হাসপাতালে ওই নারীকে ভর্তি করান। বুধবারও তার খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি। ভর্তি করানোর পর তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু কেন তাকে মৃত ঘোষণা করা হল সে সম্পর্কে অবগত নন তিনি। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানান পরিচালক।

No comments

Powered by Blogger.