সৎকার করা ‘পাপ’ তাই ‘গডম্যানে’র মৃতদেহ ফ্রিজিং: আশ্রমকে ঘিরে চলত যৌনতা

মারা যাওয়ার ১১ মাস পরেও ‘গডম্যান’-এর মৃতদেহ সৎকার না করে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে। তিনি পাঞ্জাবের স্বগোষিত গডম্যান আশুতোষ মহারাজা। তার মৃতদেহ দীর্ঘ ১১ মাস ধরে রাখা হয়েছে জলন্ধরের দিব্য জ্যোতি জাগরতি সংস্থানে। গত মাসের শেষের দিকে আদালত রায় দেয় ১৫ দিনের মধ্যে আশুতোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হবে। আদালতের রায় মেনে নিতে পারছেন না বাবা আশুতোষের ভক্তরা। তারা বলছেন, বাবার সৎকার করা ‘পাপ’। আগামী ১২ই ডিসেম্বর বিরাট জমায়েতের ডাক দেয়া হয়েছে। তারপর দিনই কোর্টের  বেধে দেয়া সময়সীমা শেষ হচ্ছে। চলতি বছর ২৯শে জানুয়ারি চিকিৎসকরা আশুতোষ মহারাজকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর বাবার ভক্তরা আর কাউকে আশুতোষের দেহ পরীক্ষা করতে দেয়নি। সেদিন  থেকেই বিশেষ উপায়ে ফ্রিজিং করে আশুতোষের দেহ রেখে দেয়া হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ভক্ত বাবার মৃতদেহকে প্রণাম করে আসে। কিছুদিন আগে হরিয়ানার স্বঘোষিত গডম্যান রামপালের আশ্রমে হানা দিতে গিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। সেই অভিযানে বেশ কয়েকজন মারা যান। আহত হন অনেকে। সেইরকমই কিছুর আশঙ্কা জলন্ধরের এই আশ্রমেও করা হচ্ছে।
আশ্রমকে ঘিরে চলত যৌনতা ও স্বেচ্ছাচার:
এদিকে অভিযোগ আছে, তার আশ্রমে ধর্মকে বর্ম করে পুরোদমে চলত অবাধ  যৌনতা ও স্বেচ্ছাচার। প্রতিদিন রাতে তাকে সেবা করার জন্য শয্যাসঙ্গী হতেন সুন্দরী ভক্তরা। হরিয়ানার ‘গডম্যান’ রামপালের শোওয়ার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে তার যৌনচর্চার ভূরিভূরি প্রমাণ হাতে পয়েছে পুলিশ। হিসারের সৎপাল আশ্রমের ভিতরে বাবা রামপালের দেখানো পথে অবাধ যৌন স্বেচছাচারে মেতে উঠতেন তার ভক্তরাও। আর এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু রজনীশের আদলে রামপালও আশ্রমের আড়ালে রীতিমতো মধুচক্রের আসর  ফেঁদে বসেছিলেন। রামপালের আশ্রম থেকে তার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশাল বিলাসবহুল ঘর থেকে পুলিশ উাদ্দার করেছিল একাধিক গর্ভনির্ণায়ক যন্ত্র, যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর ওষুধ। এমনকি তার ঘরের সঙ্গে লাগোয়া শৌচালয় থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই মহিলার উপর যৌন নিগ্রহ চালানো হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। কিশোরী ও তরুণীদের আশ্রমে জোর করে আটকে রেখে তাদের উপর শারীরিক নিগ্রহ চালানো হত বলেও অভিযোগ উঠেছে। রামপালের আশ্চর্য ক্ষমতার কথা শুনে উত্তরপ্রদেশের বেরেলি থেকে হিসারের আশ্রমে ১৪ বছরের বোনকে নিয়ে এসেছিলেন বিমলেশ কুমার নামে এক তরুন। তার অভিযোগ, রামপাল বোনের সঙ্গে কথা বলবে বলে তাকে আলাদা করে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর থেকে বোনের কোনও খোঁজ পাননি। তার আশঙ্কা, বাকিদের মতো বোনকেও রামপালের যৌনলালসার শিকার হতে হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রামপালের এলোমেলো বিছানা ও বসার আসনের নীচে লুকনো ছিল ওষুধ ও গর্ভনির্ণায়ক যন্ত্র। প্রথমে তার আলমারি খুলতেই দেখা যায় রিভলবার, রাইফেল-সহ বিস্ফোরক। বিছানার তলায় অস্ত্র লুকিয়ে রাখা থাকতে পেরে অনুমান করে পুলিশ বিছানা সরাতেই বেরিয়ে পড়ে গডম্যানের যৌনচর্চার সামগ্রী৷ এরপরই প্রকাশ্যে আসে ৬৩ বছরের রামপালের যৌন কেলেঙ্কারির কথা। এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় ধর্ষণে অভিযুক্ত স্বঘোষিত গুরু আশারামবাপুর কথা।

No comments

Powered by Blogger.