বরিশাল আওয়ামী লীগে সক্রিয় আবদুল্লাহ by জিয়া শাহীন

বরিশাল আওয়ামী লীগে এখন সাদিক আবদুল্লাহ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ দক্ষিণাঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ হঠাৎ করেই চলে এসেছেন লাইম লাইটে। সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর দলে যে নেতৃত্ব শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তারই ফলে মাঠে বেশ জোরেশোরেই আভির্ভূত হয়েছেন হাসানাতপুত্র সাদেক আবদুল্লাহ। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক পদটি তাকেই দেয়া হচ্ছে- এমন গুঞ্জন এখন বরিশালজুড়ে। বরিশাল আওয়ামী লীগ বলতেই আগে ছিল আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। পুরো দক্ষিণাঞ্চলেই তার প্রভাব ছিল উল্লেখ করার মতো। তার স্ত্রী মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি। পরিবারের এ দু’জনই মোটামুটি সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন। তিন পুত্রের মধ্যে বড় পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ রাজনীতিতে পা রাখেন ২০০৮ সালে। তবে তা উল্লেখ করার মতো নয়। বরিশালে তখন হিরণের জয়জয়কার। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বরিশালের মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের পতাকা উড়ান এ নেতা, যা ছিল বরিশালের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের বিস্ময়কর উত্থান। আর এর পরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব চলে যায় হিরণের হাতে। কেন্দ্র থেকেও তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। হিরণ নতুন একঝাঁক নেতা নিয়ে কাজ করায় পুরনো ও ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতারা ছিলেন ক্ষুব্ধ। তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতেন না। আবার বেশ কয়েকজন হাসানাত অনুসারী চলে আসেন হিরণের কাছে। সব দিক দিয়ে এ সময়ে হাসানাতপন্থিরা ছিলেন কোণঠাসা। ২০১৪ সালের এপ্রিলে শওকত হোসেন হিরণের আকস্মিক মৃত্যু কোণঠাসা হয়ে পড়েন হিরণের অনুসারীরা। বিশেষ করে তরুণ নেতারা নেতৃত্বহীনতায় দিশাহারা হয়ে পড়েন। আর সুবিধাবাদীরা আবার হাসানাতের কাছে যেতে থাকেন। ঠিক এ সময়ে হিরণপত্নি জেবুন্নেছা আফরোজকে হিরণের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য জোর চেষ্টা করেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা। সহানুভূতিও পান সর্বত্র। এমপি নির্বাচিত তিনি। কিন্তু দলের হাল ধরা বা সব দিক ম্যানেজ করতে হিমশিম খেতে থাকেন তিনি। ঠিক এ সময়ে আবার মাঠে আভির্ভূত হন সাদেক আবদুল্লাহ। সাদেক আবদুল্লাহ মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বড় একটি অংশের সমর্থন পান। নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাকে লুফে নেন। দলের সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সবার আগে থাকছেন। এদিকে হিরণের অবর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। কেন্দ্র থেকে যে কোন সময়ে ঘোষণা হবে নতুন কমিটি। এ কমিটি নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, সভাপতি পদে হিরণপত্নি জেবুন্নেছা আফরোজকেই চাচ্ছেন মহানগর নেতারা। কিন্তু তার পরিবর্তে কর্নেল জাহিদ ফারুক শামিমের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আফজালুল করিমের পরিবর্তে সাদেক আবদুল্লাহর নাম চলে এসেছে। মহানগর ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী নঈমুল ইসলাম লিটু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন। মহানগর আওয়ামী লীগকে চাঙ্গা করতে হলে সাদিক আবদুল্লাহকেই প্রয়োজন। ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন আহম্মেদ শাহিন বলেন, আমি আশা করছি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন সাদিক আবদুল্লাহ! তিনি পারবেন দলকে শক্তিশালী করতে। মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের শূন্যতা পূরণে আশার প্রতীক সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি ছাড়া কেউ হাল ধরতে পারবেন না। জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জুবায়ের আবদুল্লাহ জিন্নাহ একই কথা বলেন।

No comments

Powered by Blogger.