‘ফুর্তি’র স্বর্গরাজ্য মালদ্বীপ by দীন ইসলাম

ডলার থাকলে কোন চিন্তা নেই মালদ্বীপের বিভিন্ন রিসোর্টে। এ সব বিলাসবহুল রিসোর্টে থাকতে লাগে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এক বেলা খেতে গেলে প্রতি জনকে সর্বনিম্ন গুনতে হবে ১০০ থেকে ১২০ ডলার বা প্রায় দশ হাজার টাকা। এত কিছুর পরও বিভিন্ন বয়সী পর্যটকরা স্রোতের মতো আসেন মালদ্বীপের রিসোর্টগুলোতে। রিসোর্ট খালি থাকে না। একদিকে চেক ইন, অন্যদিকে চলছে চেক আউট। মালদ্বীপে স্রোতের মতো আসাদের মধ্যে চীন, কাতার, দুবাই, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের পর্যটকের সংখ্যাই বেশি। বিভিন্ন রিসোর্টের কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আরব দেশের কিছু চিহ্নিত পর্যটক তাদের বডিগার্ড নিয়ে মালদ্বীপের রিসোর্টগুলোতে বেড়াতে আসেন। এসেই রিসোর্টের বিভিন্ন কর্মীর সহায়তায় আনন্দ ফুর্তিতে মেতে ওঠেন। তখন বডিগার্ডরা পাশের রুমে থেকে বসকে বেশ ভালভাবে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করেন। মালদ্বীপের ইব্রাহিম নাসির ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে খুব নিকটে অবস্থান শেরাটন ফুলমোন রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা। এয়ারপোর্ট থেকে এ রিসোর্টে স্পিড বোটে  যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট। আরবের ধনকুবের কাছে জৌলুসপূর্ণ এ রিসোর্টটির রয়েছে আলাদা কদর। চারপাশে সমুদ্র ও সবুজ বনানীতে ঘেরা এ দ্বীপে হাত বাড়ালেই সব মিলবে। নারী, মদ বা হেরোইন- এসব কোন কিছুরই যেন অভাব নেই। শুধু অর্ডার দিতে দেরি। এ রিসোর্টটিতে সব টাইপের রুম রয়েছে। রুমগুলোর প্রতিদিনের ভাড়াও আকাশছোঁয়া। সর্বনিম্ন ৪২ হাজার, সর্বোচ্চ ৬.৫ লাখ। কোন কোন রিসোর্টের সঙ্গে সুইমিং পুলসহ সব সুবিধা রয়েছে। রয়েছে স্পা সেন্টার। ওই সেন্টারে খোঁজ করলেই মিলবে সঙ্গিনী। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে মালদ্বীপের প্যারাডাইস রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, শেরাটন ফুলমুন রিসোর্ট অ্যান্ড স্পাসহ কয়েকটি দ্বীপে তিন রাত অবস্থান করে জানা গেছে চমকপ্রদ তথ্য। ‘সি প্লেন’ দিয়ে যেসব রিসোর্টে যেতে হয় ওই সব রিসোর্টেও রয়েছে চমৎকার সুযোগ। ওই সব রিসোর্টের ভাড়া কিছুটা কম হলেও সি প্লেন ভাড়াসহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করতে বাড়তি খরচ করতে হয়। মালদ্বীপের কয়েকটি পর্যটক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পর্যটক আসছেন। কেউ কেউ নতুন বিয়ে করে হানিমুন করতে এসেছেন। এসেই রিসোর্টের পাশের সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। আনন্দ ফুর্তিতে মেতে উঠছেন। অনেকে নিজের দেশ থেকে যোগাযোগ করে একাকী আসছেন। এসেই নানা ফুর্তিতে মেতে থাকেন। মালে শহরের পাশে একটি দ্বীপে অবস্থিত ইব্রাহিম নাসির ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। এয়ারপোর্ট থেকে বেরুলেই বিভিন্ন রিসোর্টের কাউন্টার। রিসোর্টের কাউন্টারে বুকিং-এর কাগজপত্র দেখালে কর্মীরা নিয়ে যাবে সি প্ল্যান বা সিপড বোটের জেটিতে। এয়ারপোর্টের পাশেই রয়েছে সি প্ল্যানের জেটি ও সিপড বোট। এরপর নির্ধারিত গন্তব্যে পা বাড়ান পর্যটকরা। প্যারাডাইস রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’য় কর্মরত বাংলাদেশী কর্মী জামাল জানান, আরবের ধনাঢ্যরা গোটা রিসোর্ট নিয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন কাটিয়ে যান। নানা সুবিধার কারণে অনেকে রুম থেকেই বের হন না। অনেকের কাছ থেকে শুনেছি বাড়িতে ওরা বলে আসেন ব্যবসার কাজে যাচ্ছি। কিন্তু মালদ্বীপে এসে ফুর্তিতে সময় কাটান। তারা খুব একটা বাইরে বেরুতে চান না। শেরাটন ফুলমোন রিসোর্ট ও স্পাতে বাহারি আয়োজন। রিসোর্টটির মূল কেন্দ্র অনেকটা বাইরে রয়েছে স্পা সেন্টার। ওই সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় আরব দেশগুলোর নাগরিকরা ফুর্তিতে মজে আছেন। অনেকেই সন্ধ্যায় স্পা সেন্টারে গিয়ে মধ্যরাতে রুমে ফেরেন। রুমে ফিরে মেতে ওঠেন বাহারি সেবনে। এরপর মধ্যরাতে রিসোর্টে সঙ্গিনীকে নিয়ে বেড়াতে পছন্দ করেন। অনেকে সারা রাত রিসোর্টের চারদিকে ঘুরে বেড়ান।

No comments

Powered by Blogger.