সিরিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ শহরের প্রবেশমুখে আইএস

সিরিয়ার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর কোবানির প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান নিয়েছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা। যেকোনো সময় তারা তুরস্কের সীমান্তসংলগ্ন এই শহরে প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পশ্চিম ইরাকের হিত শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে জঙ্গিরা। এই পরিস্থিতিতে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। খবর এএফপি, রয়টার্স ও সিএনএনের। আইএসের জঙ্গিরা কয়েক দিন ধরেই কোবানি শহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলাও তাদের ঠেকাতে পারেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা কোবানি শহরের প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান নেয়। শহরে তাদের প্রবেশ ঠেকাতে মার্কিন বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কুর্দি যোদ্ধারা। এই শহরের আরেক নাম আইন আল-আরব। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরীয় মানবাধিকার সংগঠন অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ‘আশঙ্কার বিষয় হলো, আইএসের জঙ্গিরা যেকোনো সময় কোবানি শহরে ঢুকে পড়তে পারে।’
এদিকে ইরাকের আনবার প্রদেশের প্রাদেশিক কাউন্সিলর আদনান আল-ফাহদায়ি বলেছেন, জঙ্গিরা প্রদেশের হিত শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল ও নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র জানায়, এ সময় আইএস হিত শহরের পুলিশ সদর দপ্তরে হামলা চালায়। এতে পুলিশের সাত সদস্য ও সেখানে থাকা চারজন সেনা নিহত হয়। এ ছাড়া রামাদি শহরে আইএসের হামলায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ছয়জন সদস্য নিহত হয়েছে। পৃথক এই হামলার সময় আইএসের অন্তত ৪০ জঙ্গি নিহত হয়। লড়াইতে যোগ দিচ্ছে তুরস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গত বুধবার পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘এই অঞ্চলে আইএসসহ সব সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধেই কার্যকরভাবে লড়াই করব আমরা।’ তিনি বলেন, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের দমনে ‘টন টন বোমা ফেলা’ দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান নয়। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
‘মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে আইএস’: ইরাকে আইএসের জঙ্গিরা ‘যুদ্ধাপরাধ পর্যায়ের’ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। অন্তত ৫০০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, সুন্নি চরমপন্থীদের ওপর ইরাক সরকার যে বিমান হামলা চালাচ্ছে, তাতেও অনেক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। সরকার বিভিন্ন গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি হাসপাতালেও বিমান হামলা চালাচ্ছে; যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
সিরিয়ায় ৪১ শিশু নিহত: সিরিয়ায় বুধবার জোড়া বোমা বিস্ফোরণে ৪১ শিশুসহ ৪৫ জন নিহত হয়েছে। অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, সরকারনিয়ন্ত্রিত হোমস শহরের আকরামেহ আল-মাখজুমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। আরব দেশগুলোর হামলা চায় না ইরাক: ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-এবাদি বলেছেন, আইএস দমনের লক্ষ্যে অন্য আরব দেশগুলো ইরাকে হামলা চালাক, সেটা তিনি চান না। পশ্চিমা বিমান হামলার সহায়তা নিয়ে ইরাকি বাহিনীই আইএসকে পরাজিত করতে পারবে বলে দাবি করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.