তুরস্কে পৌঁছেছে ইরাকি যোদ্ধারা

সিরিয়ার সীমান্তবর্তী কোবানি শহরে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ইরাকি কুর্দিদের ১৫০ জনের একটি দল বুধবার প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে এসে পৌঁছেছে। তারা এখন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সিরিয়ায় ঢোকার পরিকল্পনা করছে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইরাকি কুর্দি পেশমার্গা যোদ্ধাদের একটি কন্টিনজেন্ট তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া আর্টিলারিসহ ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের অপর একটি দল পৃথকভাবে সড়কপথে তুরস্কে এসেছে। তুরস্ক সম্প্রতি নিজ দেশের কুর্দিদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচণ্ড চাপের মুখে গত সপ্তাহে ইরাকি কুর্দিদের ১৫০ জনের দলকে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ার কোবানিতে ঢোকার অনুমতি দেয় আঙ্কারা। ইরাকে কুর্দিদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানীর নাম ইরবিল। কুর্দি যোদ্ধারা ইরবিল ছাড়ার সময় হাজার হাজার সমর্থক হাততালি দিয়ে এবং পতাকা উড়িয়ে তাদের বিদায় জানান।
খবরে বলা হয়, পেশমার্গা বাহিনীর প্রথম দলটি বুধবার ভোরে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সানলিয়ার্ফা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এরপর তারা বাসে করে বিমানবন্দর ত্যাগ করে। এ সময় তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের প্রহরায় ছিল।দলটি তুরস্কের মুরসিতপিনার সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে কোবানি ঢুকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধারা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কোবানিতে আইএসের বিরুদ্ধে লড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটও আইএসের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন বিমান হামলায় আইএসের বহু যোদ্ধা নিহত ও সামরিক সরঞ্জামাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইএস জঙ্গিরা শহরটির দখল নিতে না পারলেও এটি অবরুদ্ধ করে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলাও তাদের অবরোধে ফাটল ধরাতে পারেনি। কারণ প্রয়োজনীয় রসদ ও নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি অটুট থাকায় আইএস দ্রুতই তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছে। এ প্রেক্ষাপটে আইএসের বিরুদ্ধে সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয় ইরাকি কুর্দিরা। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ইরাকি কুর্দি যোদ্ধাদের কোবানি যেতে সহায়তারও ঘোষণা দেয় পার্শ্ববর্তী দেশ তুরস্ক।
এবার নারীর শিরñেদ করল আইএস
এবার ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধারা এক কুর্দি নারী যোদ্ধা রেহানার শিরñেদ করেছে বলে জানা গেছে। তিনি সিরিয়ার কোবানি শহরের কুর্দিদের নারী প্রতিরক্ষা ইউনিটের সদস্য ছিলেন। খবরে বলা হয়েছে, রেহানা একজন নারী যোদ্ধা হিসেবে ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ আইএস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সিরিয়ান কুর্দিদের সংগঠন দ্য পিপল’স ডিফেন্স ইউনিট এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। প্রসঙ্গত, সিরিয়ার কোবানি শহরে পিপল’স ডিফেন্স ইউনিট ও কুর্দিশ ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির পাশাপাশি সেখানকার নারীরাও শুরু থেকেই আইএস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছেন। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক হাজার নারী যোদ্ধা কোবানি রক্ষায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়ছেন। তবে সর্বশেষ খবরে সঠিক কোনো দিনক্ষণ উল্লেখ করা হয়নি। আইএস যোদ্ধারা সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর কোবানির দখল নিতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.