থাই সেনাবাহিনীকে পক্ষ নিতে বাধ্য করবেন না : সেনাপ্রধান

থাই সেনাবাহিনীকে পক্ষ নিতে বাধ্য করবেন না। সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ আছে নিরপেক্ষ থাকবে। নির্দিষ্ট কোনো পক্ষে যেতে তাদের বাধ্য করবেন না। বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক বিবৃতিতে সরকার ও বিরোধী দলের উদ্দেশে একথা বলেন থাই সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চান ওচা। থাইল্যান্ডে চলমান সরকার পতন আন্দোলনে এই প্রথমবারের মতো থাই সেনাবাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট করলেন থাই সেনাপ্রধান। সরকার এবং বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পরিবর্তন যেমন প্রয়োজন, আইনশৃংখলা রক্ষা করাও তেমনই গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুক বিবৃতিতে তিনি আরও জানান, থাইল্যান্ডে অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ওপর সেনাবাহিনীর নজর রয়েছে। থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি পক্ষ সেনাবাহিনীর অংশীদারিত্ব চাইছে। সেনাবাহিনীর সমর্থন চাইছে। যা সেনাবাহিনী কখনোই করবে না বলে জানান প্রায়ুথ। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, রাষ্ট্রের আইনানুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করে। এতদিনও করেছে, এখনও করবে। এর ব্যত্যয় ঘটবে না। সামরিক বাহিনী সবসময় জাতি, ধর্ম, রাজা এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। থাই সেনাবাহিনী কোনোভাবেই এই চার স্তম্ভের বাইরে যাবে না। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ভুল হোক সঠিক হোক- সব দলকেই আইন মেনে চলতে হবে। যদি কোনো দলই আইন না মানে, এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ধ্বংস করতে আইনের অপব্যবহার করে সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী তার দায়িত্ব পালন করবে। ক্ষমতার লড়াই আপস না করলে থাইল্যান্ড যে বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে শেষ পর্যন্ত জনগণকেই সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে। সেনাবাহিনী কখনোই এটা বরদাশত করবে না। দেশকে ধ্বংসাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া যাবে না। দেশ বাঁচাতে সেনাবাহিনী তাদের জীবন উৎসর্গ করতে বদ্ধপরিকর। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এদিন উভয় পক্ষকেই শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন সেনাপ্রধান।
পাশাপাশি, দলের অভ্যন্তরে আইনশৃংখলা রক্ষা বিষয়ক প্রচারণা শুরুর পরামর্শ দেন প্রায়ুথ। সবশেষ তিনি জানান, থাই সেনাবাহিনী রাজনৈতিক বিরোধে জড়াবে না। এদিকে থাইল্যান্ডে সেনা অভ্যুত্থান ঘটবে না বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করছেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। কোনো সহিংসতা ঘটতে দেয়া হবে না। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী ইংলাক মুখে সেনা অভ্যুত্থান ঘটবে না বললেও খোদ তার দলীয় নেতারাই অভ্যুত্থানের আশংকা করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে সারা দেশে। বিশেষ করে ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সেনাবাহিনীর জাতীয় কুচকাওয়াজ প্রস্তুতি বাদ দিয়ে রাজধানী ব্যাংককের বিশেষ বিশেষ স্থানগুলোতে সামরিক সরঞ্জামসহ সেনা উপস্থিতিতে শংকিত হয়ে পড়েছেন তারা। তাদের আশংকা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা বিধিমালার দোহাই দিয়ে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে থাই সেনাবাহিনী। আর এভাবেই পূর্বসূরিদের মতো এবার সেনাঅভ্যুত্থান ঘটাতে পারেন সেনাপ্রধান প্রায়ুথ। এদিকে থাইল্যান্ডে থাকসিন শাসনামলের অবসান দাবিতে রাজধানী ব্যাংককে হাজার হাজার লোক প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে। এ বিক্ষোভকে তাদের ঘোষিত রাজধানী অচল করে দেয়ার পূর্বপ্রস্তুতি বলে মনে করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে। তারা আগামী ১৩ জানুয়ারি রাজধানী অচল করার ঘোষণা দিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.