দায়ভার এড়াবেন কীভাবে?

পুলিশ জনগণের বন্ধু। সরকারি দল ও বিরোধী দলনির্বিশেষে রাষ্ট্রের সব জনগণের নিরাপত্তারক্ষায় পুলিশের ভূমিকা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। পুলিশ যখন সরকারি দলের পক্ষ নিয়ে বিরোধীদের দমনে তৎপর হয়, তখন মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়। বর্তমান সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সরকারি দলের দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণের ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। মিছিল-সমাবেশ গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কিন্তু গণমাধ্যমে দেখা যায়, বিরোধী দল মিছিল বের করলেই পুলিশ বাধা দিচ্ছে ও গুলি ছুড়ছে। ফলে মিছিলকারীরাও পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ইটপাটকেল ছুড়ছে। ক্ষেত্রবিশেষে ভাঙচুর করছে। বিরোধী দল আহূত মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে যোগদানের জন্য বিরোধীদলীয় আইনজীবীরা মিছিলসহ বের হতে চাইলে পুলিশ গেট বন্ধ করে দিচ্ছে, জলকামান দিয়ে পানি ছিটাচ্ছে কিন্তু সরকারি দলের লোকজন যখন মিছিল নিয়ে আইনজীবীদের ওপর হামলার জন্য ছুটে গেলেন, তখন জলকামানের পানি ছিটানো দূরে থাক, পুলিশ কোনো রকম প্রতিরোধের চেষ্টাই করেনি। এতে মহিলা আইনজীবীসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী প্রহূত হন। হরতাল-অবরোধে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় দেশের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এ কারণে পুলিশি পাহারায় যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ঠেকাতে সরকারি দলের অবরোধে দেশের কি কোনো ক্ষতি হয় না? আবার সেই অবরোধ সফল করতে যখন পুলিশকে রাস্তায় ব্যারিকেড দিতে দেখা যায়, তখন সাধারণ জনগণের পুলিশ সম্পর্কে কী ধারণা সৃষ্টি হয়? আইজিপি বললেন, দেশে কোনো গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না। কিন্তু প্রতিদিন গ্রেপ্তারের যে সংখ্যা গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, তাহলে সেসব কী? বিরোধী দলের শত শত নেতা-কর্মী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছেন, অনেকে গুম হয়েছেন। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি সেই দায় অস্বীকার করতে পারবে? বিরোধী দলের চিফ হুইপকে পুলিশ পিটিয়েছে। রিমান্ডে শারীরিকভাবে নির্যাতন আইনত অবৈধ হলেও বর্তমানে রিমান্ডের নামে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
উল্লিখিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে বর্তমান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়ভার এড়াবেন কী করে?
মো. ইয়াছিন, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা।

No comments

Powered by Blogger.