পাঠকের মন্তব্য: অনলাইন থেকে জনগণকে বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই

অনলাইনে প্রথম আলো (prothom-alo.com) নিয়মিত পড়া হয় ১৯০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন।
তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।

গণধর্ষণ, মেধাবী ছাত্রীর স্বপ্নভঙ্গ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এক শিক্ষার্থীর ধর্ষণকাণ্ডের শিকার হওয়ার খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আশিক ইমরান লিখেছেন, যদি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হয়, তবে ধরে নিতে হবে আমাদের দেশ অন্যায়ে ভরে গেছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দেশে কি কোনো আইনকানুন নেই? এটাই কি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে পাওয়া আমাদের স্বাধীন দেশ? একেকটা বিচারের দীর্ঘসূত্রতা আরও অনেক ঘটনার সূত্রপাত ঘটায়। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
হাবিব সুমন: নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে একযোগে মেয়েটির পাশে দাঁড়ানোর এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ ও আহ্বান জানাই। যেমনটা দেখেছিলাম ইয়াসমিনের সময়, এবারও এমন একটা বিক্ষোভ চাই।
ওয়াহিদ হোসেন সিদ্দিকী: ধর্ষকদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে না পারলে সামাজিক এই ব্যাধি বাড়তেই থাকবে। দুই বছর হয়ে গেল পরিমলের জেরা চলছে, শাস্তির কোনো ঠিকঠিকানা নেই। ধর্ষকদের দ্রুত আটক করে তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে তাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যায়।

আওয়ামী লীগ এখন কী করবে?
নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে এ প্রশ্ন তুলেছেন সোহরাব হাসান। তাঁর নিবন্ধ পাঠ করে মতামত জানিয়ে আহমাদ সোলায়মান লিখেছেন: শুধু আওয়ামী লীগ কেন, ক্ষমতায় থাকতে কেউ ভালো কথা বুঝতে চায় না। ক্ষমতার বাইরে গেলেই বোল পাল্টায়। বড় বিচিত্র এ ক্ষমতা! ক্ষমতাসীনদের এ মানসিকতা থেকে কীভাবে বের করে আনা যায়, সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ। যা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হয়, ক্ষমতার পালাবদল হবে। কিন্তু এতে কোনো সমাধান হবে কি? বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে আবার একই ঘটনা ঘটাবে। সাধারণ জনগণের করণীয় নির্ধারণের এটাই সবচেয়ে ভালো সময়।
মো. রায়হানুল আমিন: জিএসপি বাতিল হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের ভোট কমেছে—এটি খাতা-কলমের হিসাব। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। জোয়ার এখন বিএনপির পক্ষে, তাই বিএনপি জিতেছে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর জোয়ার আসে এবং আমরা আগের সবকিছু ভুলে যাই। এ ছাড়া আর কী করব, হাতে তো অন্য কোনো পছন্দ নেই। যা-ই হোক, আমাদের ভালো একটা বিকল্প দরকার, যারা ভোটের রাজনীতি করবে, জনতার রাজনীতিও করবে।
শফিক: সামরিক শাসকেরা আগে বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল করতেন, পরে সেই ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে নির্বাচনের নাটক সাজাতেন। ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে নির্বাচনের নাটক সাজালেও যা আগে অবৈধ, তা সারা জীবন অবৈধই থাকবে। পাকিস্তান ৬৫ বছর পর বুঝতে পারল, পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারীদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা উচিত। দেশটির শেষ নির্বাচনে তা-ই হয়েছে। পারভেজ মোশাররফকে আবর্জনা মনে করেছে দেশটির জনগণ। বিষয়টি আমরাও একসময় বুঝতে পারব। পাকিস্তানের বুঝতে লেগেছে ৬৫ বছর, আমাদের না হয় লাগবে ৭০ বছর। এ দেশে কোন দুটি দল অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, জনগণ একদিন ঠিকই বুঝবে।
কামরুজ্জামান: আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা নিয়ে যত গোঁয়ার্তুমি করবেন, ততই নৌকা আস্তে আস্তে ডুবতে থাকবে। আসলে গণতন্ত্রে গোঁয়ার্তুমির কোনো স্থান নেই। হাইকোর্টের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে, এমনটি না বলে সরকারের উচিত তত্ত্বাবধায়ক-ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা। আমার বিশ্বাস, এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে এবং আওয়ামী লীগেরই লাভ হবে।

আজমত উল্লাকে সমর্থন দিলেন এরশাদ
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ সংবাদে মত জানিয়ে ফারুক হোসেন লিখেছেন: এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়ে বড় দুই দলের টানাটানি দেখে সত্যি লজ্জা লাগে। সকালে এক কথা, বিকেলে আরেক কথা বলা এসব ব্যক্তিকে দেশের রাজনীতির অঙ্গন থেকে যত দ্রুত বিদায় করা যায় ততই মঙ্গল।
সাজ্জাদ হোসেন: এরশাদকে যে বিশ্বাস করেছে, সে মরেছে। মনে হয় এত বহুরূপী রাজনীতিক বিশ্বের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি মুহূর্তে বিক্রি হয়ে যান যে কারও কাছে। এমন চরিত্রের জন্য রংপুরে তিনি তাঁর ভিত্তি হারিয়েছেন। গাজীপুরে তাঁর যে গুটি কয়েক সমর্থক আছেন, তাঁরা কি এরশাদের এ অন্তিম ঘোষণায় সাড়া দেবেন? কখনোই না। এবার খুব ভালোভাবে প্রমাণিত হবে, ভোটের মাঠে এরশাদ কোনো নিয়ামক নন।
মাহবুব: এরশাদের সমর্থন নিতে অনেক দেরি করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। গাজীপুরে জাতীয় পার্টির অনেক নেতা-কর্মী এখন মান্নান ও বিএনপির পক্ষে কাজ করতে শুরু করেছেন। এর পরও আজমত উল্লাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য এরশাদ সাহেবকে ধন্যবাদ।

সেনাবাহিনীকে নিয়ে ফাউল খেলবেন না: সারওয়ার্দী
রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে পোশাকশ্রমিক রেশমাকে উদ্ধার নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টার জবাবে নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বক্তব্যে মতামত জানিয়ে কাজী আবদুল মান্নান লিখেছেন: রেশমাকে জীবিত উদ্ধার ও পত্রিকার খবরগুলোর যথাযথ বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে জাতিকে সঠিক প্রতিবেদন দেওয়া উচিত। আর যারা মিথ্যা প্রচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের সবার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
এ জে তালুকদার: সেনাবাহিনীকে কেউ সরাসরি দায়ী করেনি। যেহেতু রেশমা উদ্ধার নিয়ে দেশে ও বিদেশে কিছুটা হলেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে কারণে কেউ কেউ এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। অবশ্যই এ দাবি অন্যায় কিছু নয়। তাই এ দাবিকে ‘ফাউল খেলা’ আখ্যায়িত করাও দুঃখজনক।
সরদার ইউনুস: সন্দেহ, আশঙ্কা ও হতাশা—এ নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকা। যাদের কাজকর্ম নেই, তারা সন্দেহবাতিক হবে, এটাই স্বাভাবিক। সময়োপযোগী ও শক্তিশালী বক্তব্য দেওয়ার জন্য মি. সারওয়ার্দীকে ধন্যবাদ।

লিমনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা, বিচারের জন্য পাঠানো হয়েছে
র‌্যাবের গুলিতে পা-হারানো লিমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার বাইরে আরেকটি মামলা শুরুর খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সোলায়মান লিখেছেন: এ ঘটনাকে ‘রাষ্ট্র বনাম লিমন’ কিংবা বলা যেতে পারে ‘রাষ্ট্র বনাম ১৬ কোটি জনতা’। লিমন যত দিন এভাবে হয়রান হতে থাকবেন, তত দিন সরকারের প্রতিও জনগণের ঘৃণা বাড়তে থাকবে।
তুষার: র‌্যাবের খেয়ালিপনার কারণে কোটি মানুষের সামনে একটি অসহায় ছেলের প্রতি কী অবিচার ও জুলুমই না করছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে সত্যকে মেরে ফেলা হচ্ছে।
বিপ্লব রায়: লিমনের মতো নিরীহ মানুষের চোখের জলে এ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা যে ভেসে যাচ্ছে, তা সরকার এখনো বুঝতে পারছে না। সত্যকে সব অপশক্তি ভয় পায়। তবে কি রাষ্ট্র এখন অপশক্তির ভূমিকায়?

খালেদা জিয়া দেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে পড়েছেন: ইনু
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যে মত জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন: জনগণকে এত বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই। আমরা সবাই জানি যে ইনু সাহেবের মতো রাজনীতিবিদেরা অনেক কথা বলেন।
সোহেল রহমান: কী আর করবেন? জনগণের সুচিন্তা ও মেধাবিকাশের চেষ্টা করুন। ভুলেও শক্তি প্রয়োগের চিন্তা করবেন না।
নূর আলম: মাননীয় মন্ত্রী, আপনি ও প্রধানমন্ত্রী বলছেন, খালেদা জিয়া জিএসপি বাতিলের জন্য মার্কিন সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন। আবার কখনো বলছেন, খালেদা মার্কিন পত্রিকায় নিবন্ধ লিখেছেন। এক খালেদা জিয়ার লেখালেখিতে যদি জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে যায়, তবে আপনারা ক্ষমতায় থেকে কী করছেন?
(পাঠকের মন্তব্য বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.