দিল্লি দখলের ডাক দিলেন মমতা

ভারতের পার্লামেন্ট (লোকসভা) নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। বিশেষ করে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) এবং বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চার (এনডিএ) নেতারা ভোটারদের কাছে টানতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বসে নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আগামী নির্বাচনে তিনি নেতা-কর্মীদের প্রতি দিল্লি দখলের ডাক দিয়েছেন। আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে ভারতের পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা মনে করেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অর্থাৎ চার মাসের মধ্যে লোকসভার ভোট হতে পারে। কারণ, ইউপিএ সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। এদিকে ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা চালিয়েছে। এসব সমীক্ষায় উঠে এসেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ বা এনডিএ—কোনো জোটই সরকার গঠন করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। দুই জোটকেই অন্য রাজনৈতিক দলের সাহায্য নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। সর্বশেষ দ্য উইক সাময়িকীর সমীক্ষায় উঠে এসেছে, আগামী নির্বাচনে এনডিএ ১৮৪টি আর ইউপিএ ১৬২টি আসন পেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, এসব সমীক্ষা প্রকাশের পর মমতার মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে, আগামী নির্বাচনে তৃতীয় কোনো শক্তি বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসতে পারে। তাই তিনি ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও বিজেপিবিরোধী ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছিলেন। অবশ্য তাঁর ওই ডাকে তেমন সাড়া মেলেনি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নির্বাচনের ফলাফলে যদি দেখা যায়, আঞ্চলিক দলগুলোর জোট সরকার গঠনের মতো অবস্থানে চলে এসেছে, সে ক্ষেত্রে মমতা নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় তৃতীয় জোটকে সমর্থন দিতে পারেন। এতে তাঁর দিল্লি দখলের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। এমনকি তাঁর সামনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগও আসতে পারে। গত শনিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় মমতা সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে জয়ের ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী। দিল্লি দখলের জন্য তৈরি হন। ভবিষ্যতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার মূল কারিগর হবে তৃণমূল কংগ্রেস।’ জনসভায় তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাকে আর দিল্লির দিকে তাকাতে হবে না। দিল্লিকেই বাংলায় ভিক্ষা চাইতে আসতে হবে। যেভাবে চলছি, চালাচ্ছি, তাতে আমি দিল্লি চালিয়ে দেব। এরপর দিল্লিকে কিনে নেব আমরা। ’ মূলত মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের জোট ভেঙে যাওয়ার পর মমতা এখন আর ভিড়তে পারছেন না এনডিএতে। এর আগে এনডিএ থেকে দুবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছিলেন। সংখ্যালঘু ভোট হারানোর শঙ্কায় তিনি এখন বিজেপির দিকে ঝুঁকতে পারছেন না। বিজেপি বা এনডিএর দিকে ঝুঁকলে তাঁর সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক হারাতে হবে। তাই মমতা এবার আঞ্চলিক দল নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নেন।

No comments

Powered by Blogger.