তাদের দক্ষতা ও পেশাদারি প্রশংসনীয় আরও নারী পুলিশ চাই

নীতিনির্ধারণী স্তরে ভূমিকা পালন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশের নারী পুলিশ ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করেছে। এখন তারা যুক্ত হয়েছে নারী পুলিশের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে।
গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে নারী পুলিশের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই পটভূমিতে দেশে নারী পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি সামনে এসেছে। গত শনিবার বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে নারী পুলিশের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো প্রশংসিত হয়েছে।
নির্যাতিত নারীর জন্য জরুরি সহায়তা, নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা অভিযুক্ত কোনো নারীকে গ্রেপ্তারের জন্য নারী পুলিশ অপরিহার্য। কিন্তু এটাই তাদের একমাত্র কাজ নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমনসহ পুলিশের নিয়মিত সব কাজেও নারী পুলিশ যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। এমনকি গোলযোগপূর্ণ অবস্থায় শান্তি রক্ষায়ও নারী পুলিশ বাহিনী রাস্তায় কর্তব্য পালন করে। তাই নারীর কাজের ক্ষেত্র এখন অবারিত। নারীর জন্য পুলিশের চাকরি বেশ মর্যাদাপূর্ণ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
পুলিশের প্রায় সব শাখায় উচ্চতর পদে নারী পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। র‌্যাবের একজন ডিআইজি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে একজন অতিরিক্ত কমিশনারসহ বেশ কিছুসংখ্যক অতিরিক্ত পুলিশ পরিদর্শক ও এসপি পদে নারী পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের নারী পুলিশ পেশাদারি দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পুলিশকে জেন্ডার সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তোলার কর্তব্যই সামনে এসেছে। এ জন্য জেন্ডার গাইডলাইন ও জেন্ডার মডিউল তৈরি করা হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে এসব নীতিমালার সঠিক বাস্তবায়ন নারী পুলিশের আরও এগিয়ে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।
দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু নারী পুলিশের সংখ্যা মাত্র ছয় হাজার বা তারও কম। এক হিসাবে নারী পুলিশ ৪ শতাংশের বেশি নয়। এই অনুপাত অন্তত ১০ শতাংশ হলে সার্বিকভাবে পুলিশের ভূমিকা আরও উন্নত হবে। পাশের দেশ ভারতেও ১৫ শতাংশ নারী পুলিশ রয়েছে। সুতরাং, বাংলাদেশেও আরও নারী পুলিশ চাই।

No comments

Powered by Blogger.