সাত মাস পর জনসমক্ষে ভাষণ- বিরোধীরা পশ্চিমাদের হাতের পুতুল: বাশার

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাঁর বিরোধীদের ‘পশ্চিমাদের হাতের পুতুল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর সরকার সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজতে আলোচনা করার মতো কোনো বিরোধী পক্ষ পায়নি।
প্রেসিডেন্ট বাশার গতকাল রোববার রাজধানী দামেস্কের দার আল-আসাদ সেন্টার ফর কালচার অ্যান্ড আর্টস ভবনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন। সাত মাস পর এই প্রথম জনসমক্ষে বক্তৃতা করলেন বাশার।
বাশার বলেন, ‘সহিংসতা বন্ধের জন্য আলোচনা করার মতো কোনো বিরোধী পক্ষ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। এর মানে এই নয়, আমরা রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে নই। তথাকথিত বিরোধী পক্ষগুলো পশ্চিমাদের হাতের পুতুল। তাদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে না।’ তিনি বলেন, সিরিয়া সরকার ‘দাস নয়, মালিকের সঙ্গে’ আলোচনা করতে চায়। দেশে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে সহিংসতা চলছে—বিষয়টি এমন নয়। একটি জাতির বিরুদ্ধে তার শত্রুদের সহিংসতা চলছে।
বাশার তাঁর বক্তৃতায় সহিংসতা বন্ধে কূটনৈতিক উদ্যোগ নাকচ করে দেননি। এ জন্য জাতীয় সংলাপ আয়োজন ও গণভোটের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে জোর দিয়ে বলেন, তাঁরা ‘সন্ত্রাসবাদী’ মতাদর্শ ধারণকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যাবেন না।
বাশার আবারও অভিযোগ করেন, সিরিয়ার সহিংসতায় বিদেশিদের হাত রয়েছে। বিদেশি শক্তিই সিরিয়ায় সহিংসতা ছড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘আল-কায়েদার মতাদর্শ অনুসরণকারীদের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়তে হচ্ছে।’ সহিংসতার কারণে জনগণতে অনেক মূল্য দিতে হচ্ছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘দেশে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা থাকলে জনগণ কখনোই শান্তিতে থাকতে পারে না।’ তাই সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়তে জনগণকে সরকারের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান বাশার। তিনি বলেন, ‘এই দেশ আমাদের। দেশ ও দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও আমাদের নিতে হবে।’
ছয় দিনে প্রায় নয় হাজার সিরীয় জর্ডানে: সহিংসতার কারণে গত ছয় দিনে প্রায় নয় হাজার সিরীয় জর্ডানে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে জর্ডান সরকার। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনমার হামদ বলেন, ‘গত ছয় দিনে আট হাজার ৮৩৫ জন সিরীয় পালিয়ে জর্ডানে আশ্রয় নিয়েছে। এদের বেশির ভাগই এসেছে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে।’
সিরিয়ায় ২০০১ সালের মার্চ থেকে বাশারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এর পর থেকে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.