জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল দাবিতে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ

অবিলম্বে বাংলাদেশের ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল’র বিলুপ্তি ঘটিয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিচার কার্যক্রম শুরুর  দাবিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেয়ার পর ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ করা হয়।
এ স্মারকলিপির কপি নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেলের কাছেও হস্তান্তর করেছেন বিক্ষোভকারিরা।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন ‘হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফর বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান মাহতাবউদ্দিন আহমেদ। এতে ৩টি দাবি জানানো হয়েছে।

এগুলো হচ্ছে ১. বাংলাদেশের তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দিয়ে বিরোধীদেরকে দমনের মতলববাজির বিচার বন্ধ, ২. ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যুদ্ধের সময়কার সমস্ত ঘটনার তদন্তে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন’ গঠন এবং ৩. এই তদন্ত কমিশনের দৃষ্টিতে যদি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজন অনুভূত হয় তাহলে যুগস্লাভিয়া অথবা রুয়ান্ডার মত জাতিসংঘ ট্রাইব্যুনাল কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট স্থাপন করতে হবে।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন ডা. ফজলুল হক, মীর মাসুম আলী,  মাহতাবউদ্দিন, এটর্নী আব্দুল আজিজ, কাজী ইসমাইল প্রমুখ।

এ বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘কোয়ালিশন অব বাংলাদেশী আমেরিকান এসোসিয়েশন’র কাজী ইসমাইল হোসেন।

বক্তব্য রাখেন অন্যান্যের মধ্যে ডা. ফজলুল হক, আলম চৌধুরী, আমিনুর রশীদ জামসেদ, মাহবুবুর রহমান, রশীদ আহমেদ, ডা. আজিজুল্লাহ, নইমউদ্দিন, রাশেদুজ্জামান প্রমুখ।

বক্তারা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশে বাকশালী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার নীলনক্সা বাস্তবায়িত করার জন্যেই বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে।

তারা আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করার সুগভীর একটি চক্রান্ত সক্রিয় রয়েছে সরকারের কোন কোন মহলে। সে চক্রান্তের মাধ্যমে সরকার সাজানো যুদ্ধাপরাধের মামলা দিয়েছে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, মামলার সাক্ষ্য শেষ হবার আগেই রায় লিখে নেয়া হচ্ছে-যা গোটাবিশ্ব এখন জেনেছে। এভাবেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তার কৌশল গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার। এহেন আচরণের বিরুদ্ধে দেশ-প্রবাসে দুর্বার ঐক্য গড়ার আহবান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, প্রবাসে জামায়াত সমর্থকদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই। সে কর্মসূচির অংশ হিসেবে এটি হচ্ছে জাতিসংঘের সামনে দ্বিতীয় সমাবেশ। এ সমাবেশেও বেশ কিছু শিশু ও তাদের মা-খালারা ফেস্টুন-পোস্টার বহন করেন।

শনিবার আবারো বিক্ষোভ
বার্তা সংস্থা এনা প্রেরিত অপর সংবাদে বলা হয়েছে, ১৫ ডিসেম্বর শনিবার দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত জাতিসংঘের সামনে আরেকটি বিক্ষোভ-সমাবেশ করবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন।

দলীয় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তি এবং দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ এবং সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল ১৩ ডিসেম্বর রাতে (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল) বার্তা সংস্থা এনাকে আরো জানান, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তার জন্যে বর্তমান সরকার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। গণতন্ত্রের লেবাসে তারা চরম স্বৈরাচারি আচরণ করছে এবং সরকারের অপকর্মের সমালোচনা যারাই করছেন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হচ্ছে। এথেকে সাংবাদিক এবং সংবাদপত্র-টিভিও রেহাই পাচ্ছে না। সরকারের এ ধরনের মনোভাব আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করতেই এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’

বিক্ষোভ-সমাবেশের প্রতি ইতিমধ্যেই সমর্থন ব্যক্ত করেছে নিউইয়র্কে বসবাসরত যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক এম এ বাতিনসহ যুক্তরাষ্ট্র যুবদল, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য এবং সিটি বিএনপি, শ্রমিক দল, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস, ওলেমা পার্টি প্রভৃতি সংগঠন।

No comments

Powered by Blogger.