বেগুনবাড়ী ও মিরপুরে আগুন ২শ' ঘর ছাই

শুক্রবার বেগুনবাড়ী ও মিরপুর_ রাজধানীর এ দুই স্থানে ভয়াবহ অগি্নকা- সংঘটিত হয়েছে। অগি্নকা-ে প্রায় ২শ' বসত্মি, টিনশেড ঘর ও দোকানপাট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৰয়ৰতির পরিমাণ কোটি টাকার বেশি। আগুন নেভাতে গিয়ে ২৫ জন আহত হয়েছেন।


বেগুনবাড়ীতে গ্যাসের লাইন ও মিরপুরে হোটেলের চুলা থেকে অগি্নকা-ের সূত্রপাত ঘটেছে। আগুনের সময় লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অগি্নকা-ে সর্বস্ব হারানো ৰতিগ্রসত্মদের আহাজারিতে রাতের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
সন্ধ্যায় বেগুনবাড়ী এলাকায় হাতিরঝিল প্রকল্পের রাসত্মার পাশে গড়ে ওঠা টিনশেড বসত্মিঘরে আগুন লাগে। প্রায় দুই ঘণ্টার অগি্নকা-ে পঞ্চমতলা ভবনসহ কয়েকটি উঁচু ভবনের পাশ ঘিরে গড়ে ওঠা টিনশেড বসত্মি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ সব টিনশেড ঘর ও বসত্মিতে নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস।
গ্যাসের লাইন থেকে অগি্নকা-ের সূত্রপাত ঘটে তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে টিনশেড ঘরগুলোতে। অগি্নকা- হয়ে ওঠে সর্বগ্রাসী। আগুনের লেলিহান শিখা বহুদূর থেকে দেখা যায়। আগুনের কু-লি পাকানো ধোঁয়া আকাশের দিকে উর্ধগামী হয়ে ভয়াবহ রূপ নেয়। টিনশেড ঘরে লাগা আগুনের উর্ধমুখী লেলিহান শিখা পাঁচতলাসহ কয়েকটি বহুতল ভবনের উঁচু দরজা-জানালায় গিয়ে পেঁৗছে। বহুতল ভবনগুলোও আগুন থেকে রৰা পায়নি।
প্রত্যৰদশর্ীরা জানান, দৰিণ বেগুনবাড়ীর হাতিরঝিল প্রকল্পের রাসত্মার পাশের গীতিকার ঢাল এলাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন টিনশেড ঘর, কাঁচাপাকা ঘর ও বহুতল ভবনে অগি্নকা- ঘটেছে। বসত্মি এলাকার মতো এ সব বাড়িঘরে নিম্নআয়ের মানুষ ভাড়া থাকত। অনেক ছাত্রও এ সব ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত। মানুষজন আগুনের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসে। যে যা কিছু হাতের সামনে পেয়েছে তা দিয়েই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। আগুন নেভাতে গিয়ে ২৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে 'আগুন আগুন' চিৎকার করে মানুষজন আগুন নেভাতে দৌড়ে আসে। দেড় শতাধিক বসত্মির মতো টিনশেড ঘর পুড়ে যাওয়ায় তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ঘিঞ্জির মতো ঘন ঘন ঘরগুলোর একটিতে আগুন লাগার পর আরেকটিতে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে এ সব ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় পৌষের তীব্র শীতের রাতে নিম্নআয়ের এ সব মানুষের মধ্যে নেমে আসে চরম দুর্দশা। তীব্র শীতের যন্ত্রণা ও বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় তারা খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে রাতযাপনে বাধ্য হয়। যখন আগুন লাগে তখন অনেকেই রাতের রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। রান্না করতে না পারায় অনেকেই তীব্র শীতের যন্ত্রণার সঙ্গে অভুক্ত রাত কাটায়।
দমকল বাহিনী জানায়, পাঁচটা পঁয়ত্রিশ মিনিটে দৰিণ বেগুনবাড়ীর হাতিরঝিল প্রকল্পের নতুন রাসত্মা এলাকার টিনশেড ঘরের বসত্মিতে আগুন লাগে। গ্যাস লাইন থেকে আগুন লেগে তা আশপাশের বহুতল ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। দেড় শতাধিক বসত্মি ও ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দমকল বাহিনীর ৮ স্টেশনের ১৭ গাড়ির প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন আয়ত্তে আসে। অগি্নকা-ের ফলে হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় গড়ে ওঠা নিম্নআয়ের মানুষের বসত্মি ও টিনশেড ঘরগুলো ধ্বংসসত্মূপে পরিণত হয়। এতে কোটি টাকার বেশি অর্থসম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ৰতিগ্রসত্ম মানুষজন সর্বস্ব হারিয়ে শুধুই আহাজারি করছেন।
মিরপুর এক নম্বরের ২নং রোডের এইচ বস্নকের কলওয়ালাপাড়ার একটি মার্কেটে বেলা আড়াইটায় অগি্নকা- ঘটেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার অগি্নকা- আয়ত্তে আসে বিকেল চারটায়। হোটেলের চুলা থেকে অগি্নকা-ের সূত্রপাত বলে দমকল বাহিনী জানায়। মিরপুর কলওয়ালাপাড়ার চারতলা বাড়ির পাশের একটি মার্কেটে অগি্নকা-ের ফলে প্রায় ২০ দোকান ভস্মীভূত হয়েছে।
ভস্মীভূত দোকানের রয়েছে তুলার দোকান, বেডিং দোকান, জুতোর কারখানা, আলমারির দোকান, সার্ভিসিং স্টোর, কলার গুদাম, বৈদু্যতিক সরঞ্জামাদির দোকান, টেইলারিং শপসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান।
হোটেল থেকে আগুন লাগার পর পর দ্রম্নতবেগে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। তুলার ও বেডিং দোকান থাকায় আগুন হয়ে ওঠে সর্বগ্রাসী। কু-লি পাকিয়ে আকাশমুখী আগুনের লেলিহান শিখা বহুদূর থেকে দেখা যায় বলে প্রত্যৰদশর্ীরা জানান। দোকানপাট ভস্মীভূত হওয়ায় অনেকে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। অগি্নকা-ে ৰতিগ্রসত্মরা সর্বস্ব হারিয়ে এখন শুধু আহাজারিই করছেন।

No comments

Powered by Blogger.