‘টাইগার’ পতৌদি আর নেই

অনেকের চোখেই তিনি ভারতের সেরা অধিনায়ক। একসময় ছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অধিনায়কও। একটা সময় তিনিই ভারতীয় ক্রিকেটারদের মনে ঢুকিয়েছিলেন আত্মবিশ্বাসের বীজ। ভারতীয় ক্রিকেটের সেই অগ্রপথিক মনসুর আলী খান পতৌদি আর নেই। ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়ে দিল্লিতে কাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০।
১৯৬১ থেকে ১৯৭৫—১৪ বছরে ভারতের হয়ে ৪৬টি টেস্ট খেলে ৩৪.৯১ গড়ে ২৭৯৩ রান করেছেন। ৩১০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে করেছেন ১৫৪২৫ রান, গড় ৩৩.৬৭। তবে শুধু পরিসংখ্যান দিয়েই ‘টাইগার’ পতৌদিকে বোঝানো যাবে না, পতৌদি ভারতীয় ক্রিকেটেরই এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। অসুস্থ অবস্থায় গত ২৯ আগস্ট দিল্লির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।
১৯৬২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ক্যারিবীয় পেসার চার্লি গ্রিফিথের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে যেতে হয় ভারতের অধিনায়ক নরি কনট্রাক্টরকে। নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হয় ২১ বছর বয়সী পতৌদিকে। মনসুর আলী খান পতৌদি হয়ে যান টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক। ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের টাটেন্ডা টাইবু ভেঙে দেওয়ার আগ পর্যন্ত রেকর্ডটি তাঁরই ছিল।
টেস্ট অভিষেকের কয়েক মাস আগে ইংল্যান্ডে এক সড়ক দুর্ঘটনায় এক চোখ হারিয়েছিলেন। এই প্রতিকূলতা জয় করেও খেলে গেছেন টেস্ট ক্রিকেট। ৪০টি টেস্টে অধিনায়কত্ব করে ভারতকে জিতিয়েছেন ৯টিতে। তবে টেস্ট জয়ের সংখ্যা নয়, অধিনায়ক পতৌদি আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন দল পরিচালনা এবং দূরদর্শী ক্রিকেটীয় চিন্তার কারণে। তাঁর নেতৃত্বেই ১৯৬৮ মালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট জেতে ভারত।
পতৌদির মতো বিখ্যাত তাঁর পরিবারও। তবে সফেদ ক্রিকেটে নয়, তাঁদের খ্যাতি রুপালি জগতে। বলিউড অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর তাঁর স্ত্রী। ছেলে সাইফ আলী খান ও মেয়ে সোহা আলী খানও চলচ্চিত্র তারকা। আরেক মেয়ের নাম সাবা আলী খান।
পতৌদির সন্তানেরা কেউ ক্রিকেটার নন, তবে তিনি নিজে কিন্তু ক্রিকেটারেরই সন্তান। বাবা ইফতিখার আলী খান পতৌদি টেস্ট খেলেছেন ইংল্যান্ড ও ভারত দুই দেশের হয়েই।

No comments

Powered by Blogger.