ফুকুশিমায় পরমাণুকেন্দ্রের ফাটল দিয়ে নামছে তেজস্ক্রিয় পানি

জাপানে ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ফাটল দিয়ে তেজস্ক্রিয় পানি নামছে সাগরে। গতকাল শনিবার কেন্দ্রটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির (টেপকো) কর্মকর্তারা এ কথা জানান। কর্মকর্তারা বলেন, কেন্দ্রের দ্বিতীয় চুল্লির নিচে দেখা দেওয়া এই ফাটল উপকূলীয় পানিতে সাম্প্রতিক তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর কারণ হতে পারে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান গতকাল জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
গত শুক্রবার একজন রুশ বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, জাপানে পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি চেরনোবিল দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতিকে ছাড়িয়েযেতে পারে। এটি হতে পারে পারমাণবিক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বোঝানোর আন্তর্জাতিক মাপকাঠি।
টেপকোর কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় চুল্লির নিচে তেজস্ক্রিয় তরল পদার্থের যে ধারক রয়েছে, এতে ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) দীর্ঘ ফাটল দেখা দিয়েছে। তাঁরা ওই গর্তে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে ফাটল বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জাপানের নিউক্লিয়ার অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি এজেন্সির উপমহাপরিচালক হিদেহিকো নিশিইয়ামা পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পরমাণুকেন্দ্রটির কাছাকাছি সমুদ্রের পানিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা তীব্র। এর কারণ নিশ্চিত হতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা ওই চুল্লির গর্তের পানি ও পরমাণুকেন্দ্রের কাছাকাছি সাগরের পানির নমুনা পরীক্ষা করছি। ফলাফল না জানা পর্যন্ত আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না।’
গতকাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সফর করেন নাওতো কান। এর আগে তিনি বিমানে করে দুর্গত এলাকা পর্যবেক্ষণ করলেও সশরীরে যাওয়া এই প্রথম।
রিকুজেনতাকাতা এলাকা পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাদের পুনর্বাসনে সব ধরনের সরকারি সহায়তার আশ্বাস দেন।
রাশিয়ার শীর্ষপর্যায়ের পরমাণুবিরোধী কর্মী তাপগতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ নাতালিয়া মিরোনোভা বলেন, চেরনোবিলে পারমাণবিক দুর্ঘটনায় যে দুর্যোগ দেখা দিয়েছিল, ফুকুশিমার ঘটনা তা ছাড়িয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে জানমাল ও আর্থিক দিক দিয়ে অনেক বেশি মাশুল গুনতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.