চীনের সমালোচনায় অ্যামনেস্টি

প্রতিবছর কতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, তার সঠিক সংখ্যা জানাতে চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল মঙ্গলবার সংস্থার একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিশ্বের বাকি দেশগুলোতে যতগুলো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, শুধু চীনে তার চেয়ে বেশি মানুষ মৃত্যুদণ্ডে মারা যায়। কিন্তু চীনা সরকার প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে কম সংখ্যা প্রকাশ করে।
লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রকৃতপক্ষে চীনে বছরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা হাজারের ওপর। সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীন ছাড়া ইরান, ইরাক, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার অনেক বেশি।
অ্যামনেস্টির অন্তর্বর্তী মহাসচিব ক্লদিও কর্দোন বলেন, ‘চীনা কর্তৃপক্ষের দাবি তারা কমসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। কিন্তু তাদের বক্তব্য সত্য হলে, কেন তারা বিশ্বকে নির্দিষ্ট করে জানাচ্ছে না, কতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়? মৃত্যুদণ্ড একটি নিষ্ঠুর কাজ। এটা মানুষের জন্য মর্যাদাহানিকর। চীনে যাঁরাই মৃত্যুদণ্ড পান, তাঁরা কেউই আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানে সুবিচার পান না।’
সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছর বিশ্বে ১৮টি দেশে ৭১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫৬টি দেশে ২০০১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। চীন ছাড়া ইরানে কমপক্ষে ৩৮৮ জন, ইরাকে ১২০ জন, সৌদি আরবে কমপক্ষে ৬৯ জন ও যুক্তরাষ্ট্রে ৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি জানায়, চীন, ইরান ও সুদানে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া, বিরোধীদের মুখ বন্ধ করা বা রাজনৈতিক বক্তব্য প্রচারের জন্য গত বছর এ সাজা অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছর ইরানে ১১২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
সব ধরনের অপরাধের সাজার তালিকা থেকে মৃত্যুদণ্ডকে তুলে দিয়েছে বুরুন্ডি ও টোগো। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ নিয়ে বিশ্বের ৯৫টি দেশ থেকে মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। আরও নয়টি দেশ সাধারণ অপরাধের সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড তুলে দিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.