ভার্জিনিয়ায় বর্ণবাদী দাঙ্গা, নিহত ৩

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে শ্বেতাঙ্গ উগ্রপন্থীদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষকালে ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের মিছিলে একটি গাড়ি চালিয়ে দেয়ার ঘটনায় অন্তত তিন জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়। স্থানীয় সময় শনিবার ভার্জিনিয়ার শার্লোসভিল শহরে এ ঘটনা ঘটে। দাঙার ঘটনায় ভার্জিনিয়ার গভর্নর রাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন। জানা গেছে, দাসপ্রথার পক্ষে লড়েছিলেন লি নামের এমন এক কনফেডারেটপন্থী জেনারেলের মূর্তি অপসারণের প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল বের করে উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা। এরপর শনিবার শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী, নয়া নাৎসীবাদী ও কুখ্যাত বর্ণবাদী গোষ্ঠী কু ক্লুক্স ক্লানের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় শহর শার্লোটসভিলে বড় ধরনের শোডাউনের ঘোষণা দেয়। তাদের ভাষ্যমতে এদিনের মিছিলে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় জমায়েত হাজির করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এদিকে একই দিন বর্ণবাদবিরোধীদের বিরুদ্ধে বড় আকারে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামে উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিরোধীরা। উভয়ের পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে শনিবার সকাল থেকেই শান্ত শহর শার্লোসভিলের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সকালে উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা শহরটির একটি পার্কে জমায়েত হয়। অন্যদিকে কাছাকাছি একটি সড়কে কয়েকশ' পাল্টা বিক্ষোভকারীও জড়ো হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষে ধস্তাধস্তি ও পানির বোতল ছোড়াছুড়ির মধ্যে দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।
তখন পুলিশ উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পার্কটি খালি করে ফেলে। সংঘর্ষে আটজন আহত হয়। সংঘর্ষকালে হাতেনাতে একজনকে পাকড়াও করে পুলিশ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উভয় পক্ষে রেষারেষি চলাকালেই বেলা ১১টায় ভার্জিনিয়ার গভর্নর রাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এক পর্যায়ে বর্ণবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের জমায়েতে একটি গাড়ি উঠিয়ে দেয়ার ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের মুখপাত্র অ্যাংগেলা টেইলর জানান, বিকালের দিকে ২০ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালটি নেয়া হয়। এর মধ্যে একজন মারা যায়। পরে শার্লোসভিল শহরের ম্যানেজার মরিস জোনস এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে একজন গাড়ি উঠিয়ে দেয়ার ঘটনায় নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি। নিহত ব্যক্তি একজন ৩২ বছর বয়সী নারী। তিনি রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ি চাপা পড়নে বলে জানান শার্লোসভিল পুলিশের প্রধান থমাস। তিনি বলেন, যে গাড়িটি বিক্ষোভকারীদের ওপর উঠিয়ে দেয়া হয়েছে তার চালককে আটক করে নিরাপত্তা হাজতে রাখা হয়েছে। এদিকে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত বাকি দুজনের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ ও শহরটির কর্তৃপক্ষ। তবে থমাস জানান, শনিবার বিকাল নাগাদ মোট ৩৫ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তারা তেমন একটা জীবনের ঝুঁকিতে নেই বলে জানান তিনি। সূত্র: এএফপি ও ওয়াশিংটন পোস্ট

No comments

Powered by Blogger.