তিস্তায় রেড এলার্ট

গত ৪ দিনের ভারী বর্ষন আর উজানের ঢলে তিস্তা নদী ফুলে ফেপে উঠেছে। সময়ের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পানি। তিস্তার পানি শনিবার রাত ১০ টার দিকে বিপদসীমার ৪০ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচেছ। ভারতীয় একাধিক গনমাধ্যম ও বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া খবরে জানা যায়, ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের ৫৪ টি স্লুইচগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সুত্রমতে, গজলডোবায় পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে তারা সবকটি স্লুইচগেট খুলে দেয়। গজলডোবা ব্যারেজর উজানে ভারতের দো-মোহিনী পয়েন্টে গত কয়েকদিন ধরে অবিরাম বর্ষন হচ্ছিল। সেই সাথে পাহাড়ী ঢল। পানির চাপ সামলাতে গজলডোর সবকটি গেট খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। গজলডোবার গেট খুলে দেয়ার কারনে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে হুহু করে বাড়ছে পানি। উজান হতে ঢল বাংলাদেশের তিস্তা নদীতে ধেয়ে আসছে। ভারী বর্ষন আর উজানের ঢলে কারনে তিস্তা ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। শনিবার রাত ১০টায় নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা সতর্কীকরন পূর্বাভাস কেন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এদিকে রাত সাড়ে ৯টায় ভারত তাদের অংশের তিস্তা নদীতে রেড এলার্ট জারি করেছে। বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজের উজানের ভারত তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় ও ভারতের দো-মোহনী থেকে বাংলাদেশ কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় জারি হয়েছে হলুদ সংকেত। এদিকে উজান হতে ভয়াবহ ঢল আসছে খবরে তিস্তা অববাহিকায় ছড়িয়ে পড়েছে চরম আতংক। অপরদিকে ভারতের গজলডোবার গেট খুলে দেয়ার খবরে বাংলাদেশে তিস্তা অববাহিকায় সর্তকতা জারি করেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজ এলাকার ফ্লাড বাইপাস হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন সময় এটি বিধ্বস্থ হতে পারে। সেখানে অবস্থান করছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান। তিনি জানান তিস্তায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারনে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার গ্রাম ও চর এলাকায় মাইকিং ও ঢোল শহরত করে মানুজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডিমলা খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের বাঁইশপুকুরের একটি সাইট বাধ বিধ্বস্থ হয়েছে। একই ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বানপাড়া গ্রামের ঘর-বাড়ির টিনের চালের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা জানান, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার নির্দেশে মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, নদীর পানি হু-হু করে শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, উজানের ঢলের খবরে তিস্তা অববাহিকার উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের নদী বেষ্টিত গ্রাম ও চরের পরিবারগুলোকে নিরপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান জানান, ভারতের দো-মোহনী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে ধেয়ে আসছে বাংলাদেশে। তাই সর্তকতা জারি করা হয়েছে। সেই সাথে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি স্লুইচ গেট খুলে রেখে সর্তকদৃস্টি রাখা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.