তিস্তার পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপরে

লালমনিরহাটে  তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফ্লাড বাইপাস তলিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা বাধের সব গেট খুলে দেয়ার কারণে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় নীলফামারীর ডিমলায় স্থানীয় প্রশাসন রেড অ্যালার্ট জারি করে। এর আগে মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান যুগান্তরকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিস্তার উজানে ভারতে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। রাত ৯টা নাগাদ তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর ভোরে  ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা যায়। সব ইউপি চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে নদীতে অবস্থানরতদের সরিয়ে আনার নির্দেশ প্রদান করা হয়। তবে রাতেই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সন্ধ্যায় পানি বৃদ্ধির কারণে মাইকিং করে তিস্তায় বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয় বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেন উজানের পূর্ব ছাতনাই ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দুই চেয়ারম্যান। পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খান বলেন, প্রতিটি  বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৌকায় করে তিস্তায় বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিস্তায় দ্রুতগতিতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তার উজানে ভারতের অংশে ভারতীয় সেচ মন্ত্রণালয় সন্ধ্যা ৬টায় হলুদ সতর্কতা জারি করার ফলে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়। তিস্তায় অবস্থানরতদের বাধসহ উচু স্থানে আশ্রয় নেয়ার ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ প্রদান করা হয় বলে জানান ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা বাধের সব গেট খুলে দেয়ার শনিবার বিকাল থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে তিস্তার পানি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় কিসামত চরের আবুল কালাম জানান, দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে তিস্তার পানি। ছোটখাতা গ্রামের তফেল উদ্দিন বলেন, বিকাল থেকে  তিস্তার পানি বৃদ্ধি দেখে মনে হচ্ছে বড় ধরণের বন্যা দেখা দেবে। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি শনিবার সকাল ৬টা থেকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২.৪০) ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর শোঁ শোঁ শব্দ আর গর্জন তিস্তা অববাহিকা কাঁপিয়ে তুলেছে। অপরদিকে বুড়ি তিস্তা নদীটি ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এছাড়া তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের জলঢাকার দুন্দিবাড়ির দিনাজপুর প্রধান সেচ ক্যানেলের ডান তীরের বাঁধ দুইটি স্থানে বিধ্বস্ত হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহম্মদ খালেদ রহীম জানান, প্রশাসনের সব স্তরের সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কোথায় কী ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.