আদভানিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় জামিন পেয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, উমা ভারতীসহ ১২ জন। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিবিআই) একটি বিশেষ আদালত মঙ্গলবার তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। খবর এনডিটিভির। বাবরি মসজিদ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ধ্বংস হওয়ার পর কর সেবকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয় লক্ষ্ণৌ নিম্ন আদালতে। শীর্ষ বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অন্য মামলাটি হয় রায়বেরিলি আদালতে। ১৯ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মামলা শুরু করার অনুমতি দেয় সিবিআইকে। রায়বেরিলি এবং লক্ষ্ণৌয়ের আদালতকে দু’বছরের মধ্যে এ মামলার নিষ্পত্তি করার নির্দেশও দেন বিচারপতি পি সি ঘোষ এবং বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের বিচারিক বেঞ্চ। আদালতে যাতে তাদের হাজিরা দিতে না হয়, সে জন্য আবেদন করেছিলেন আদভানি ও কেন্দ্রীয় পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতী। কিন্তু সে আবেদনে আদালত সাড়া দেননি। তাই এ দিনও আদালতে হাজিরা দেন শীর্ষ বিজেপি নেতারা। দীর্ঘ ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে বাবরি মসজিদ মামলা। মঙ্গলবার এ মামলায় অভিযুক্ত ১২ জন জামিন পেলেও, ১২০বি ধারায় অর্থাৎ ষড়যন্ত্র মামলায় তাদের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এদিকে আদভানির সঙ্গে দেখা করতে এ দিন আদালত চত্বরে হাজির হন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দলের প্রবীণ নেতার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের নবীন মুখ্যমন্ত্রীর বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়।
নতুন করে বাবরি মসজিদ মামলার বিচার শুরু হওয়া নিয়ে আদভানি বা যোশী কোনো মন্তব্য করতে চাননি। চলতি বছর জুলাইয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। আদভানি এ পদের জন্য প্রথমসারির একজন প্রার্থী। আদালত চত্বরে উমা ভারতী জানান, কোনোরকম ষড়যন্ত্র নয়, এটা একটা আন্দোলন ছিল। আদালতকে তিনি সম্মান করেন বলেই উপস্থিত হয়েছেন। বিজেপি নেতা বিনয় কাতিয়ার জানান, সে সময় লাখ লাখ মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিল, তাই তাকে ষড়যন্ত্র বলা যায় না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুর মতে, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া, যা হতে দেয়া উচিত। তিনি বিশ্বাস করেন, নেতারা নির্দোষ, তাই তারা এটা থেকে বেরিয়েও আসবেন। মামলা চলছে, তাই তিনি এ বিষয়ে বিশেষ মন্তব্য করবেন না বলেও জানান। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল, তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেবেন কিনা। তখন তিনি দাবি করেছিলেন, ‘গোটা বিষয়টাই ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। ষড়যন্ত্রের কোনো প্রশ্নই উঠে না। সবকিছু মানুষের চোখের সামনে ঘটেছে। আমার বিবেক স্পষ্ট। আমার কথা ও কাজে কোনো বিভেদ ছিল না। আমার মনে একটাই বিষয় ছিল এবং আছে, সেটি রামমন্দির নির্মাণ। জেলে যেতে হলে যাব। ফাঁসিতে লটকানো হলে তাও হোক, সমস্যা নেই।

No comments

Powered by Blogger.