এবার ঈদ যাত্রায় নতুন সিট ২০ হাজার

লোকবল স্বল্পতা থাকলেও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ঈদের চেয়েও বেশি যাত্রীবাহী কোচ, স্পেশাল ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যে কোনো দুর্যোগ প্রতিরোধে নেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবারও ঈদ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে। দুই মাস আগে থেকেই ১৭৬টি বগি মেরামত করা হচ্ছে। বিভিন্ন রুটে ১৬টি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে। গত বছর রেলওয়ের বহরে নতুন বগি সংযুক্ত ও ট্রেন উদ্বোধন হওয়ায় প্রায় ২০ হাজার সিট বেড়েছে। ঈদ প্রস্তুতি নিয়ে কাল রেল ভবনে রেলপথমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চূড়ান্ত বৈঠকে বসছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গত ঈদগুলোর তুলনায় এবার সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত যাত্রীবহন, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবদুল হাই যুগান্তরকে জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এর আগে যে কোনো ঈদের চেয়ে এবারই সবচেয়ে বেশি যাত্রীবহন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং তা চলমান থাকবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক লাইন পরিদর্শন, গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ ও স্থানগুলোতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান করবেন। নতুন ট্রেন ও বগি সংযুক্ত হওয়ায় আসন সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ৮৬টি বগি সংযুক্ত করা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে কাল বৃহস্পতিবার রেল ভবনে রেলপথমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠকে বসছেন সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে কর্মকর্তারা- এমনটা জানিয়ে রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, গত কয়েক বছরে রেলওয়েতে ২৭০টি যাত্রীবাহী বগি সংযুক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ২৮ জোড়া ট্রেন উদ্বোধন করা হয়েছে। গত ঈদের চেয়ে এবারের ঈদে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার যাত্রী বেশি বহন করা যাবে। তিনি বলেন, উভয় অঞ্চলে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনগুলো নতুন বগিতে সাজায় ঈদ যাত্রীদের ভ্রমণও আরামদায়ক হবে। এবার ৮ জোড়া অর্থাৎ ১৬টি বিশেষ ‘ঈদ স্পেশাল’ ট্রেন চালানো হবে। পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিহির কান্তি গুহ যুগান্তরকে জানান,
ঈদ উপলক্ষে প্রায় ৯০টিরও বেশি যাত্রীবাহী বগি দ্রুততার সঙ্গে মেরামত করা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চলে মোট ১৭০টি ব্রডগেজ নতুন বগি চলাচল করছে। এসব বগিতে পূর্বের বগির চেয়ে প্রায় ১১ হাজার সিট বেশি আছে। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মিয়া জাহান যুগান্তরকে জানান, ঈদে অতিরিক্ত যাত্রীবহনে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। পূর্বাঞ্চলে নতুন দুটি আন্তঃনগর ট্রেন গত বছর চালু হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনেই নতুন বগির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে আগের যে কোনো ঈদের চেয়ে যাত্রীবহন বেশি করতে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা রয়েছে। চট্টগ্রাম পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, ঈদ উপলক্ষে ৮৬টি অতিরিক্ত যাত্রীবাহী বগি মেরামত করা হচ্ছে। এসব বগি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেরামত সম্পূর্ণ হবে। এছাড়া এ অঞ্চলে নতুন বগি ও ট্রেন দেয়ায় ৫ হাজার সিট বাড়ল। ঈদ যাত্রায় এর সুফল পাবেন যাত্রীরা। তিনি বলেন, পূর্বাঞ্চলে চলাচলকারী প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করা হবে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্ত্তী জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কমলাপুর স্টেশন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। গত ঈদে প্রতিদিন শুধু কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার যাত্রী রাজাধানী ছেড়েছে। এবার এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজারে।

No comments

Powered by Blogger.