অবশেষে নাঈম আশরাফ গ্রেফতার

বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি নাঈম আশরাফকেও (প্রকৃত নাম আবদুল হালিম) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে পুলিশ সদর দফতর ও ডিবির একটি যৌথ টিম মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থেকে তাকে গ্রেফতার করে। প্রযুক্তির সহায়তায় এদিন রাত ৯টার দিকে তার এক বন্ধুর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় যুগান্তরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষিত দুই শিক্ষার্থীর করা মামলায় এর আগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে সাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লাল ও বডিগার্ড রহমত ওরফে আবুল কালাম আজাদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা প্রত্যেকে রিমান্ডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছে। এর মধ্যে রিমান্ড শেষে আজ সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে আদালতে হাজির করার কথা। এদিকে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণীকে নিরাপত্তা দিতে গুলশান থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্ত সংশিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বনানী ধর্ষণ মামলার আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিম। ছদ্মনাম-পরিচয়ে ভিআইপিদের সঙ্গে তার সেলফি ও অভিনব প্রতারণার কারণে সে বেশ আলোচিত। নাঈম আশরাফের ঘনিষ্ঠজনদের তালিকায় অনেক ভিআইপির নামও রয়েছে।
এ কারণে তাকে গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছিল। এরই সূত্র ধরে পুলিশ সদর দফতরের এলআইসি শাখা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি টিম বুধবার নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিমকে গ্রেফতার করে। এদিকে বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে নিরাপত্তা দিতে বনানী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুই তরুণীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানা এ আদেশ দেন। বুধবার এ আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। আদালত সূত্র যুগান্তরকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুই তরুণীর পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ নাজমুল হুদা আদালতের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা দায়েরের পর থেকে নানাভাবে ভিকটিমদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা প্রদান জরুরি। ২৮ মার্চ ওই হোটেলে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই তরুণী। ঘটনার ৪০ দিন পর এক তরুণী বাদী হয়ে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হল : আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, সাদমান সাকিফ, নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আজাদ।

No comments

Powered by Blogger.