মার্কিনিদের মন পেলেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের ১০০তম দিন ঘনিয়ে এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২৯ এপ্রিল শনিবার হোয়াইট হাউসে পদার্পণের শততম দিন পালন করবেন তিনি। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সমর্থকদের নিয়ে বিশাল সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। শনিবার এক ট্ইুট বার্তায় এ পরিকল্পনার কথা জানান ধনকুবের প্রেসিডেন্ট। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন রাজনীতিতে প্রেসিডেন্টের প্রথম ১০০ দিনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের সময় থেকে এটি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়ে আসছে। সে সময় রুজভেল্ট প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার শততম দিনের মধ্যে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘আগামী শনিবার রাতে পেনসিলভানিয়ায় বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠান করব। সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।’ আগের দিন আরেক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রথম ১০০ দিনে আমি যত ভালো কাজই করি না কেন, মিডিয়া নির্ধারিত হাস্যকর মানদণ্ডে তা ব্যর্থ হবে।’ নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্সির ১০০ দিন নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। গত বছর প্রচারণার শেষ সপ্তাহে ট্রাম্প মিনেসোটা, ফ্লোরিডা, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনাসহ বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেন। এর প্রত্যেকটি সমাবেশে তিনি সমর্থকদের বলেছিলেন, ‘একবার কল্পনা করুন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম ১০০ দিনে আমরা অনেক কিছুই অর্জন করতে পারি।’ ওহাইওতে রিপাবলিকান দলের কনভেনশনে নিজের প্রার্থিতা গ্রহণের বিশাল অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ক্ষমতা গ্রহণ করেই সরকারের সব বিভাগকে নির্দেশ দেব, অপ্রয়োজনীয় যত প্রকল্প চালু আছে তার তালিকা দিতে।
প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই আমি সেগুলো বাতিল করে দেব।’ এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ১০০তম দিন উদযাপন করতে গেলেও জনপ্রিয়তা এখনও সর্বনিন্ম পর্যায়ে রয়েছে। তবে ট্রাম্পের কট্টর সমর্থকদের প্রায় সবাই তার প্রতি সন্তুষ্ট রয়েছে। নতুন করে ট্রাম্পের কোনো সমর্থক বাড়েনি। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের ১০০তম দিন পূর্তির এক সপ্তাহ বাকি থাকতে ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসি নিউজের এক যৌথ জরিপে দেখা যায়, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা মাত্র ৪২ শতাংশ। ১৯৪৫ সালের পর থেকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের জনসমর্থন এত নিচুতে ছিল না। ৫৩ শতাংশ মার্কিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাজকর্মে সমর্থন দেননি। ১৯৯৩ সালে এ সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ডিসঅ্যাপ্র“ভাল রেটিং ছিল ৩৯ শতাংশ। আট বছর আগে বারাক ওবামার ডিসঅ্যাপ্র“ভাল রেটিং মাত্র ২৬ শতাংশ ছিল। সে সময় ওবামার জনপ্রিয়তা ছিল ৬৯ শতাংশ। নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যারা ভোট দিয়েছিলেন তাদের ৯৬ শতাংশ জানিয়েছেন, ট্রাম্প ভালোভাবে দেশ শাসন করছেন। এখন আবার নির্বাচন হলে তারা ট্রাম্পকেই ভোট দেবেন। অন্যদিকে তার ভোটারদের মাত্র ২ শতাংশ মনে করেন তারা ভুল পাত্রে ভোট দিয়েছেন। এদিকে হিলারি ক্লিনটনকে যারা ভোট দিয়েছিলেন তাদের ৮৫ শতাংশ জানিয়েছেন, আবার নির্বাচন হলে তারা হিলারিকে ভোট দেবেন। এ হার ট্রাম্পের চেয়ে ১১ শতাংশ কম। সংকট মোকাবেলায় ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখা যায় কিনা- এমন প্রশ্নে সমগ্র জনগণের ৪৩ শতাংশ তাকে সমর্থন দিয়েছেন। অথচ এ প্রশ্নে ওবামাকে সমর্থন দিয়েছিলেন ৭৩ শতাংশ। এদিকে, প্রেসিডেন্সির ১০০তম দিন উদযাপনের ব্যয় নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিতর্ক এড়াতে পেনসিলভানিয়ার সমাবেশের খরচ হোয়াইট হাউস বহন করবে না। এ ব্যয় নির্বাহ করা হবে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন তহবিল থেকে। পরবর্তী নির্বাচনে লড়ার জন্য তিনি যে তহবিল গঠন করেছেন, সেখান থেকে এ সমাবেশের আয়োজন ও সরঞ্জামের ব্যয় সরবরাহ করা হবে। এতে ব্যানার, টি-শার্ট ও ক্যাপ থাকবে- যাতে লেখা থাকবে ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন।’

No comments

Powered by Blogger.