কেরানীগঞ্জে হচ্ছে জবির হাজার আসনের হল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে কেরানীগঞ্জে ১ হাজার আসনের হল নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান আজ বাসসকে জানান, আবাসন সমস্যা থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে বেশকিছু বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে। নতুন একাডেমিক ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কেরাণীগঞ্জে নবনির্মিত কারাগারের বিপরীতে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশেই প্রায় ২৫ বিঘা জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা হয়েছে। এখানে ছাত্রদের জন্য এক হাজার আসনের ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ নামে একটি হল নির্মিত হবে এবং সেখানে শিক্ষকদেরও আবাসনের ব্যবস্থা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন সড়কের দক্ষিণ-পূর্বপাশে ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ হল নামে ছাত্রীদের জন্য ২০-তলা বিশিষ্ট একটি হলের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিকসহ অন্যান্য সমস্যা নিরসনে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। ভিসি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চশিক্ষার তীর্থস্থানে পরিণত করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার রোল মডেলে পরিণত করতে চাই। ২০০৫ সালে সরকারি জগন্নাথ কলেজকে সরকার পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেয়। জন্ম থেকেই হাজারো সমস্যা নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটি তার পথচলা শুরু করে। তবে সব সমস্যা কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় এক যুগেরও বেশি সময়ে তার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে চলছে বলে জানান অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিকে ই-লাইবেরিতে রূপান্তর করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থার বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ২৪ হাজার বই ছাত্র, শিক্ষক ও গবেষকরা ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, ই-জার্নাল, রেফারেন্স শাখা, পত্রিকা সংরক্ষণ শাখা রয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের উদ্যোগের সাথে তাল মিলিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস তৈরি করেছে জানিয়ে ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি ওয়াই ফাই জোন, সাইবার সেন্টার রয়েছে।
সেখানে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাহায্যে একটি ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে। বর্তমানে টেন্ডার ইভালুয়েশনের কাজ চলছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আরো দ্রুত গতির ওয়াই-ফাই-এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার নিমিত্তে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বিডিআরইএন প্রকল্পের আওতায় ক্যাম্পাসে একটি আধুনিক ভার্চ্যুয়াল ক্লাস রুম স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের স্বনামধন্য যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার, লেকচার ইত্যাদি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। উপরন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে প্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের স্টুডেন্ট ডেটাবেজ অ্যান্ড এক্সামিনিশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসডিইএমএস) সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠাপুলির আয়োজন ও মেলার আয়োজন হয়ে আসছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়াও জাতীয় উৎসবগুলো ধুমধাম করে পালন করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.