মোহনগঞ্জে মারা গেছে ৫১০ টন মাছ

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরে ৭ দিনে ৫১০ টন মাছ মারা গেছে। রোববার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা এ তথ্য জানান। খালিয়াজুরীতে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এদিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ক্ষেতের ফসল, ঘেরের মাছ ও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে হাহাকার করছেন কৃষকরা। যুগান্তর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নেত্রকোনা ও মোহনগঞ্জ : মোহনগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, উপজেলায় প্রায় ১০ কোটি টাকার মাছ মারা গেছে। তবে দু’দিন ধরে অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন মাছের মড়ক বন্ধ হয়েছে। আগে যেখানে ডিঙ্গাপোতা হাওরের পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ০.৯- রোববার তা বেড়ে ৪.১৯-এ উন্নীত হয়। এদিকে ফসলহারা কৃষকদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ইতিমধ্যে খালিয়াজুরীতে চাল ও আটা খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম চালু করেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারই সীমিত। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী উপজেলার শতভাগ ফসল তলিয়ে যাওয়ায় এখানে ২৪ হাজার ১৫০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগে খালিয়াজুরী সদর থেকে তিনজন ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতি দিন ৩ টন চাল ও ১৭ টাকা কেজি দরে ৩ টন আটা খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি পরিবার দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কেনার সুবিধা পাচ্ছে। উপজেলায় ওএমএস কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার রফিকুল ইসলাম ও কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেকেই জানান, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। তাই প্রতিদিন শত শত ক্রেতা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) : ক্ষেতের ফসল, ঘেরের মাছ ও মাথা গোঁজার ঠাঁই- সবই পানিতে ভেসে গেছে গোলাপগঞ্জের হাওরাঞ্চল শরীফগঞ্জের কৃষকদের। পরিবার নিয়ে এখন কি করবেন কোথায় যাবেন সেই চিন্তায় ঘুম হারাম তাদের। পনাইচক গ্রামের কালা মিয়া (৭০) বলেন, ‘ধান নাই, মাছ নাই, মাথার গোজার ঠাঁইও নাই, আমরা এখন কিতা করতাম।’ সরেজমিন শরীফগঞ্জের পনাইচক, পানিআগা ও মেহেরপুরে দেখা যায়, বাসিন্দাদের করুণ চিত্র। এ অবস্থায় সরকারি সহায্য-সহযোগিতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা।
তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) : উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের আরও ৪০টি হাওরের বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের কান্না ও আহাজারি দিন দিন বেড়েই চলেছে। শনি ও রোববার অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে এসব হাওরের বোরো ধানের জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে উপজেলার রাউতি, ধলা, জাওয়ার, দামিহা, দিগদাইড় ও তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের অন্তত ১২ হাজার একর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.