ভারত সফরে কিছুই পায়নি বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ বিএনপি। এ সফরে দেশের জনগণ কিছুই পায়নি বলে মনে করে দলটি। দেশের জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করায় সরকারবিরোধী জনমত তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরসহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। আজ বিকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৈঠকের বিষয়বস্তু ও ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়ে দলের অবস্থান জানানো হবে। বৈঠকে শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সার্বিক বিষয় নিয়ে খালেদা জিয়াকে সংবাদ সম্মেলন করার পরামর্শ দেন। বৈঠকে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হলেও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারত সফর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করা হবে। তার বক্তব্য ও মনোভাব দেখার পর জোটের সঙ্গে বৈঠকে করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হতে পারে বলে একটি সূত্র জানায়। বৈঠকে উপস্থিত নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি। জনগণকে অন্ধকারে রেখে সরকার ভারতের সঙ্গে বেশকিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তি ও এমওইউ জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। বৈঠকে এক নেতা বলেন, ভারত যা চেয়েছে, নতজানু সরকার তা সব দিয়েছে। বিনিময়ে আমরা কিছুই পাইনি। তিস্তা চুক্তি হয়নি, বাণিজ্য ঘাটতি,
সীমান্তে হত্যা নিয়ে কোনো আশার বাণী নেই। আরেক নেতা বলেন, ভারত অন্য দেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করে সেই দেশ থেকে কিভাবে আমরা অস্ত্র কিনব। ভারত যে সাড়ে চারশ’ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাও কঠিন শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ। বৈঠকে বেশির ভাগ নেতাই মতামত দেন, ভারত সফর নিয়ে সাধারণ জনগণও ক্ষুব্ধ। এ ইস্যুতে সরকারবিরোধী জনমত তৈরি করা সম্ভব। চুক্তি ও সমঝোতার প্রতিবাদ জানিয়ে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখা উচিত। এ ক্ষেত্রে বিক্ষোভ কর্মসূচি না দিয়ে সমাবেশ করার পক্ষে মত দেন নেতারা। তবে দলের একটি সূত্র জানায়, বিকালে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বাস্তবতাবিরোধী বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের ভাব থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে এ ইস্যুতে কর্মসূচিসহ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বৈঠকে হাওর এলাকায় ঢলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। গুলশান কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৯টায় এই বৈঠক শুরু হয়ে সোয়া ১১টায় শেষ হয়। খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.