ট্রফির বাক্স লুকিয়ে রেখেছিলেন নাদিয়া

য়েক মাস আগেই শিরোপা হাতে এসেছিল নাদিয়া হোসেনের। কিন্তু তা এতদিন তাকে গোপন রাখতে হয়েছিল। বুধবারই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। বিশ্ব জানতে পারে গ্রেট বৃটিশ বেক অব পুরস্কার জিতলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া হোসেন। পিতা সিলেটের বিয়ানিবাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামের সন্তান। স্বাভাবিকভাবেই নাদিয়ার আনন্দে বিয়ানিবাজারের মানুষ গর্বিত। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার ঘোষণা দেয়ার পর বিবিসি ব্রেকফাস্ট শো’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নাদিয়া জানান, জুনের শেষ দিকেই ট্রফিটি দেয়া হয় তাকে। ‘এরপর কাগজে মুড়ে, সেটি প্রথমে একটি বাক্সে রাখি। তারপর সে বাক্সটি আরেকটি বড় বাক্সে এবং সেটিও আরেকটু বড় বাক্সে ঢুকিয়ে রাখি। আর এই বড় বাক্সটি সুটকেসে ভরে শোবার বিছানা অর্থাৎ খাটের নিচে রেখে দিয়েছিলাম।’ কেক বানিয়ে এতো বড় পুরস্কার লাভকেই জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন তিন সন্তানের জননী ৩০ বছর বয়সী নাদিয়া হোসেন। বুধবার রাতে যখন টিভিতে দেখানো হচ্ছিল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বটি, যেখানে নাদিয়াকে শিরোপা জয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি তখন এ পর্বটি দেখেছেন বাবা-মা, ভাই-বোন ও বাচ্চাদের সঙ্গেই। যদিও নাদিয়া বলছেন, বাচ্চাদের তিনি আগেই শিখিয়েছিলেন যে কিভাবে বিষয়টি গোপন রাখতে হবে। তবে তার বাবা-মা কিংবা ভাই বোন চূড়ান্ত ঘোষণার আগে জানতে পেরেছিলেন কি-না তা পরিষ্কার নয়। এক প্রশ্নের জবাবে নাদিয়া বলেন, তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিতে খাওয়ার পরে মিষ্টান্ন খাওয়ার তেমন একটা চল নেই। কিন্তু বড় হয়ে যখন স্কুলে গেলেন তখন দেখলেন যে খাবারের পরে মিষ্টি খাওয়া হচ্ছে। তখনই তার ভাবনায় এলো মিষ্টান্ন বা আরও সহজ করে বললে কেক বানানোর বিষয়টি। পরে হোম ইকোনমিক্সের শিক্ষক নাদিয়ার কেক সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তুমি তো বেশ ভাল কেক বানাও।’ বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার পর পাওয়া ফ্রি সময়টিই মূলত নাদিয়া কাজে লাগাতেন  কেক বানানোর জন্য। পরে একপর্যায়ে এই রিয়েলিটি শো-তে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় আসে তার। বুধবারের ফাইনাল পর্বে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানের বড় একটি কেক তৈরি করেন। যেটাকে তিনি তার নিজের বিয়ের গহনা দিয়ে সাজান। নাদিয়া লিডসে বাস করেন। রান্না বিষয়ক এই অনুষ্ঠানটি বৃটেনের জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি। ফাইনাল পর্বটি দেখতে ১ কোটি ৩৪ লাখ দর্শক সেদিন টেলিভিশনের সামনে ছিলেন। এই পর্বটি এখন পর্যন্ত এ বছরের সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি। চূড়ান্ত পর্বে তিনি ইয়ান কামিং এবং তমাল রায়কে হারান। ত্রিশ বছর বয়সী নাদিয়া লুটনে জন্ম নেন। তিন সন্তানের মা নাদিয়া বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন। তিনি বলেন ‘শোস্টপার হিসেবে উৎসবের কেক বানাতে বলা হয়েছিল। যেহেতু আমার বিয়ের সময় কোন কেক ছিল না তাই আমি চেয়েছিলাম একটি ভাল, মজার কেক তৈরি করতে।’ এই অনুষ্ঠানের ইতিহাসের নাদিয়া হলেন ৬ষ্ঠ বারের বিজয়ী।

No comments

Powered by Blogger.