জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সব রাজনৈতিক দল ও সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর বিরুদ্ধে সমস্ত সচেতন মানুষ এবং যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো- আমাদের দেশে এই জঙ্গিবাদ নিয়ে অপরাজনীতি করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সংকীর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতার কারণে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠছে না। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আলমগীর বলেন, সম্প্রতি দুই বিদেশী খুনের ঘটনায় গোটা জাতি উদ্বিগ্ন। কিন্তু এই জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সে ঐক্যে দেশের রাজনীতিক, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, পেশাজীবী সমাজ ও আলেম-ওলামারা থাকবেন। তিনি বলেন, এর আগেও আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয়েছিল। সে সময় আমাদের আলেম-ওলামারা মসজিদে মসজিদে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন। তাদের সহযোগিতায় আমরা দেশ থেকে সফলভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূলও করেছি। জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, দুই বিদেশী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বর্তমান সরকারের একটি অংশের সঙ্গে আরেকটি অংশের বক্তব্যের কোন মিল নেই। একটি অংশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জন্য আইএসকে দায়ী করছেন। আরেকটি অংশ অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসকে দায়ী করছেন। তবে আমাদের আশঙ্কার বিষয় হলো- দেশে গণতন্ত্রই নেই। এই গণতন্ত্রহীনতার সুযোগে দেশে উগ্রপন্থিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। যেটা আমরা কেউই চাই না। এজন্য আমরা গণতান্ত্রিক ও সহনশীল পরিবেশ চাই। দুই বিদেশী হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে দুই বিদেশী হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দেয়া বন্ধ করতে হবে। জাতীয় ঐক্য কিভাবে হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, সরকার যদি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসে, স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, তাহলে তারা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে। সরকার যেহেতু চালকের অবস্থায় রয়েছে সেহেতু জাতীয় ঐক্য গঠনে তাদেরই উদ্যোগ নিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন দেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে কেউ গ্রহণ করেনি। আমরা বারবার বলছি- একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আলোচনা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দল যদি আলাপ-আলোচনায় না বসে তাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হয় না। মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, পরীক্ষা পদ্ধতির গোটা সিস্টেমটি ভেঙে পড়েছে। শুধু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নয়, সব পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। দুর্নীতি ও লুটপাট সব ব্যবস্থাপনাকে শেষ করে দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.