৩০ মিনিটে হৃদ্রোগ নির্ণয়

রক্ত পরীক্ষার নতুন একটি পদ্ধতিতে দ্রুত ও সহজেই ধরা পড়বে হৃদ্রোগ। এটির ব্যবহার শুরু হলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি অর্ধেক কমে যেতে পারে। প্রভাবশালী স্বাস্থ্য সাময়িকী ল্যানসেট-এর অনলাইন সংস্করণে গতকাল বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ল্যানসেটকে উদ্ধৃত করে লন্ডনের ইনডিপেনডেন্ট অনলাইনে গতকাল বৃহস্পতিবার লিখেছে, যুক্তরাজ্যের এডিনবরা রয়াল ইনফার্মারি হাসপাতালের একদল বিজ্ঞানী ওই পরীক্ষাপদ্ধতি বের করেছেন। এ প্রক্রিয়ায় রক্তে বিশেষ একটি রাসায়নিক উপাদান আছে কি না, খুঁজে দেখতে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট। ৬ হাজার ৩০৪ জনের ওপর ওই পরীক্ষা চালিয়ে ৯৯ দশমিক ৬ শতাংশ নির্ভুল ফল পাওয়া গেছে।
এখন যুক্তরাজ্যের ২৬ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষাটি চালানোর পরিকল্পনা করছে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন। প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক রোগী বুকে ব্যথার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাঁদের হৃদ্রোগ নির্ণয়ের জন্য বর্তমানে দুটি পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে: একটি পরীক্ষা করা হয় রোগীকে প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই। আরেকটি এর ১২ ঘণ্টা পর। এসব পরীক্ষায় রক্তে ট্রপোনিন নামের একটি রাসায়নিক উপাদান আছে কি না, খুঁজে দেখা হয়। হৃৎপিণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত মাংসপেশি থেকে ওই উপাদান নির্গত হয়। নতুন পরীক্ষাপদ্ধতিতে ট্রপোনিনের উপস্থিতি মাত্র ৩০ মিনিটে জানা যাবে, তার মাত্রা খুব কম হলেও। তাই রোগীকে হাসপাতালে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার প্রয়োজন হবে না। রোগনির্ণয়ের পর তাঁরা সহজেই ছাড়পত্র ও মানসিক শান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন রোগী। নতুন এ পরীক্ষায় খরচ পড়বে ১০ পাউন্ডের (প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা) কম বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অনুপ শাহ ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, এ পদ্ধতির পরীক্ষায় রোগনির্ণয় করলে স্বাস্থ্যসেবার খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমবে।
এডিনবরার ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও গবেষক অতুল আনন্দ বিবিসিকে বলেন, বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৮০ শতাংশ রোগীর বাড়ি ফিরতে ১২ ঘণ্টা লেগে যায়। নতুন পরীক্ষায় দ্রুত রোগনির্ণয়ের ফলে রোগীদের বিড়ম্বনা ও উদ্বেগ যেমন কমবে, তেমনি খরচও বাঁচবে।

No comments

Powered by Blogger.