ধর্ষক ছেলের মুখ দেখতে চান না বাবা-মা

রাজধানীর কুড়িলে চলন্ত মাইক্রোবাসে এক গারো তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আশরাফ হোসেন ওরফে তুষারের মুখ দেখতে চান না তার বাবা আবদুল মান্নান খান ও সৎমা ফাতেমা বেগম। তারাও চাইছেন তুষারের উপযুক্ত শাস্তি।
গতকাল আমতলীর চুনাখালী গ্রামে তুষারদের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক আসার খবর শুনে সেখানে ভিড় করেন গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ। মান্নান খান জানান, তার ছয় সন্তানের মধ্যে তুষার মেজো। পূর্ব চুনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর সে চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও মা রেণু বেগমের মৃত্যুর পর তুষারের আর লেখাপড়া করা হয়নি। ১৯৯৯ সালে তুষার ঢাকায় পাড়ি জমান এবং গাড়ি চালানো শিখে চাকরি নেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি ঢাকার ‘সিগনেট’ বায়িং হাউজে গাড়িচালক হিসেবে কাজ করছিলেন। তুষারের চাকরির টাকায় সংসারের অভাব কিছুটা ঘুচলেও তার জঘন্য অপরাধ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার বাবা। তুষারের সৎমা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘মাইনষের কাম কইরা গুরাগাড়া লইয়া কোনো রহম খাই। তুষার মাসে দেড়-দুই হাজার ট্যাহা দিতো, হেইয়া ওর বাপের অসুখের পেছনে খরচ অইয়া যায়। অসুস্থ স্বামী কোনো কাম করতে পারে না। ও যে কাম করছে, হ্যার বিচার অওন দরকার।’ কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, ধর্ষণের ঘটনার পরদিন তুষার বাড়ি যায়। অল্প সময় থেকে কাউকে কিছু না বলে আবার চলেও যায়। তুষারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন চুনাখালী গ্রামের কৃষক জয়নালও। আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম দেলওয়ার হোসেন বলেন, তুষারের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। তার শাস্তি হওয়া দরকার।
গত ২১শে মে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের একটি দোকানের বিক্রয়কর্মী এক গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে কয়েকজন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে আশরাফ হোসেন তুষারকে (৩৫) পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে ও জাহিদুল ইসলাম লাভলুকে (২৬) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ঢাকার মহানগর হাকিম অমিত কুমার বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

No comments

Powered by Blogger.