জওয়ানদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা যায় না -রাজনাথের হুঁশিয়ারি

ভারতীয় জওয়ানদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশীদের প্রতি হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, গরু পাচার বন্ধ করে বাংলাদেশীদের গরুর মাংস থেকে বঞ্চিত রাখুন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের প্রতি এক নির্দেশনায় তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই। রাজনাথ সিং দু’দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছেন। তিনি সীমান্ত রক্ষার জন্য কি দরকার এমন প্রশ্ন রাখেন। তারপর বলেন, আমাদের জওয়ানদের ওপর আক্রমণ হবে এটা তো মেনে নিতে পারি না। তারা আত্মরক্ষার জন্যও গুলি করতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ। তাদের সঙ্গে রয়েছে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমরা চাই ভবিষ্যতেও আমাদের সেই সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ থাকুক। তবে সেই সম্পর্ক আমাদের জওয়ানদের প্রাণের বিনিময়ে হতে পারে না। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটি ভাসমান সীমান্ত চৌকি পরিদর্শনকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন। ইউপিএ সরকারের সময়ে বিএসএফ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রাণহানি কমানোর জন্য প্রাণঘাতী এমন অস্ত্রের ব্যবহারের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তবে বাংলাদেশ সরকারে উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় না থাকার বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন রাজনাথ। তার কথায়, সীমান্ত তো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন আছে। বিএসএফের হিসাবে গত তিন বছরে কমপক্ষে ৩ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০০। এটা ঘটেছে সীমান্তে পাচারকারীদের হামলায়। ওদিকে তার পশ্চিমবঙ্গ সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জবাবে রাজনাথ বলেছেন, তার এ সফর সরকারি পর্যায়ের। মমতা বলেছেন, এটা কি সরকারি সফর নাকি রাজনৈতিক সফর। রাজনাথ তারই জবাবে ওই কথা বলেন। তিনি বিএসএফকে নির্দেশ দেন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কড়া প্রহরা বসাতে, যাতে ভারতের কোন গরু বাংলাদেশে না যায়। এতে বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া বাদ দেবে। তিনি বলেন, আমাকে সম্প্রতি বলা হয়েছে, সীমান্তে গরু পাচারের বিরুদ্ধে বিএসএফ কড়া নজরদারি করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম শতকরা ৩০ ভাগ বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, তাই আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করবো নজরদারি আরও কঠোর করতে, যাতে বাংলাদেশে কোন গরু পাচার হয়ে না যায়। এতে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি পাবে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ। এটা হলে বাংলাদেশের মানুষ গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেবে। সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে ভারত থেকে ১৭ লাখ গবাদি পশু পাচার হয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এ ছাড়া গত রোববার তিনি বলেছেন, এনডিএ সরকার দেশজুড়ে গরু জবাই নিষিদ্ধ করার দিকে এগুবে। তিনি বলেন, ভারতে গরু জবাইকে মেনে নেয়া যায় না। আমরা গরু জবাই পুরোপুরি বন্ধে সচেষ্ট হবো। এজন্য জনমত গড়ে তুলব।

No comments

Powered by Blogger.