লন্ডনে দ্য ল’ সোসাইটির সেমিনারে সংলাপ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের তাগিদ by তানজির আহমেদ রাসেল

বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও চলমান সঙ্কট নিরসনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন বৃটিশ এমপি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বৃটিশ ল’ সোসাইটির আইনজীবীরা। গত বুধবার বৃটেনের দ্য ল’ সোসাইটি ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের কনফারেন্স রুমে ল’ সোসাইটি ও বাংলাদেশী স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ইউকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডেমোক্রেসি, জুডিশিয়াল রিফর্ম এন্ড হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।  সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। ক্রসফায়ার ও পেট্রলবোমার মাধ্যমে নির্বিচারে মানুষ হত্যা, গুম, রাজনৈতিক নির্যাতনসহ নানা ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র আজ পুরো বিশ্ববাসীর কাছে দৃশ্যমান হয়েছে। বর্তমানে চলমান এই রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হলো একটি গ্রহণযোগ্য মধ্যবর্তী নির্বাচনের লক্ষ্যে দুই প্রধান দলকে সংলাপে বসা। সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য যতদ্রুত সংলাপ করা যায়, ততই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। বক্তারা বৃটিশ পার্লামেন্ট, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপিয়ান কমিশনসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে সরকারকে গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান । বৃটিশ এমপি সায়মন ডানসাক বলেন, বাংলাদেশে কোন গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা নেই। বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থে, বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাতেই দেশের মঙ্গল। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে এমনটি চলতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন এখন বাংলাদেশের নিত্যদিনের ঘটনা। এই পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক। বিষয়টি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তবে, এই অবস্থা থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে একমাত্র উপায় হচ্ছে দেশের প্রধান দলগুলোর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মধ্যবর্তী নির্বাচন। এক্ষেত্রে দেশ ও মানুষের জন্য বর্তমান সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে দ্য ল’ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট এন্ড্রো ক্যাপলেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সরকার কর্তৃক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হয়রানি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে  বিভিন্ন সমীক্ষা ও বিশ্লেষণমূলক তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ইউকের চেয়ারপার্সন আতাউল্লাহ ফারুক।  দ্য ল’ সোসাইটি চেয়ারপার্সন হারল্ড পাইসনারের পরিচালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিপিপি ল’ ইউনিভার্সিটির প্রধান নির্বাহী ও ডিন পিটার ক্রিপ্স, ব্যারিস্টার টবি ক্যাডমেন, ভয়েস ফর জাস্টিস ইউকের কনভেনার ড.আবুল হাসনাত এমবিই।

No comments

Powered by Blogger.