‘এই আত্মবিশ্বাস কাজে আসবে’

উইলিয়ামসনকে আউট করে নিজের দ্বিতীয় উইকেটটি পেলেন সাকিব। অভিনন্দন
জানাতে ছুটলেন সতীর্থরা। কাল হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে
জয়ের খুব কাছে গিয়েও হার। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে হতাশার সঙ্গে তৃপ্তিও ছিল বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের কণ্ঠে। সেসব তো ছিলই, সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান কথা বললেন কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়েও...
* একটা সময় মনে হচ্ছিল, গাপটিল-টেলর সহজেই ম্যাচ বের করে নেবে। সেখান থেকে এমন লড়াকু হারে আপনি হতাশ না গর্বিত?
সাকিব আল হাসান: আসলে দুটোই। আমার মনে হয় আমরা ভালো খেলেছি। এই আত্মবিশ্বাসটা কোয়ার্টার ফাইনালে কাজে আসবে। আবার এত কাছে গিয়ে হেরে যাওয়ায় হতাশাও আছে। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ম্যাচ। যেকোনো দলই জিততে পারত। শেষ পর্যন্ত দিনটা ওদের।
* আজ সকালে বল সুইং করেছে বেশ, নিউজিল্যান্ডের ভেন্যুতে যেটা নিয়মিতই হচ্ছে। এটা মাথায় রেখে কি কোনো পরিকল্পনা ছিল?
সাকিব: কন্ডিশন দেখেই আমরা সেটা বুঝেছিলাম এবং তাই হয়েছে। তবে এও মাথায় ছিল, ১৫-২০ ওভার পর ব্যাটিং সহজ হয়ে যাবে। মাহমুদউল্লাহ পরিস্থিতি বুঝে দারুণ ব্যাটিং করেছে। অন্যরাও তাকে সাহায্য করেছে। আমাদের জন্য এটা ভালো দিক।
* আগের চার ম্যাচে তিন পেসার নিয়ে খেলেছেন। আজ কি মনে হয়েছে একজন পেসার কম ছিল আপনার দলে?
সাকিব: আসলে আজ উইকেট স্পিনারদের কিছুটা সাহায্য করেছে। হয়তো দেখেছেন, বল প্রথম দিকে সুইং করেছে। তাই আমরা প্রথমে বল করলে হয়তো মনে হতো একজন পেসার কম আমাদের দলে। কিন্তু আমরা যখন পরে বল করেছি, আমার মনে হয়েছে স্পিনাররা আরেকটু ভালো জায়গায় বল ফেলতে পারলে ওরা আরও সমস্যায় পড়ত।
* আপনার কি মনে হচ্ছে, এই ম্যাচটাই শুধু বাংলাদেশ হেরেছে, কিন্তু পেয়েছে আরও অনেক কিছু?
সাকিব: হ্যাঁ, আমি আগেও বলেছি, ম্যাচ হারার একটা হতাশার দিক তো আছেই। তবে এখান থেকে আমাদের ইতিবাচক অনেক কিছু নেওয়ার আছে। যেটা কোয়ার্টার ফাইনালে কাজে লাগবে। এই আত্মবিশ্বাসটা থাকলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।
* ইতিবাচক দিকগুলো কী?
সাকিব: বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত আমরা খুব ভালো ব্যাটিং করেছি। এ ম্যাচেও সেটা হয়েছে। ২৮০-২৯০ যেকোনো উইকেটেই কম নয়। আমাদের ফিল্ডিং ভালো হয়েছে। বোলিংও খারাপ হয়নি, তবে এ জায়গায় আরও উন্নতি করতে হবে।
* কখন মনে হলো জিতে যাচ্ছেন, কিংবা হেরে যাচ্ছেন?
সাকিব: কোরি অ্যান্ডারসন আউট হওয়ার পর আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু নাসিরের ওভারে ড্যানিয়েল ভেট্টোরির ছক্কাটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। তবে ওটা বাদ দিলে আমরা কিন্তু সব সময় ওদের চাপে রেখেছি। তাই আজকের ম্যাচের অধিনায়ক হিসেবে মনে হয় না কোনো কিছুর খুব একটা অভাব দেখেছি আমার দলে।
* মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং নিয়ে কিছু বলুন...
সাকিব: তিনি পুরো টুর্নামেন্টেই দারুণ ব্যাট করেছেন। আমার মনে হয় তিনি এখন টুর্নামেন্টের পাঁচ সর্বোচ্চ রানসংগ্রহকারীর একজন। আশা করি, কোয়ার্টার ফাইনালেও ফর্মটা ধরে রাখতে পারবেন। তবে তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়নি। আমরা চাই, তিনি আরও একটা সেঞ্চুরি করুন। সাঙ্গাকারা টানা চার সেঞ্চুরি করতে পারলে মাহমুদউল্লাহ কেন পারবেন না!
* প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আপনি আবার অধিনায়কত্ব করলেন, সেটিও ঘটনাচক্রে। অভিজ্ঞতা কেমন?
সাকিব: ভালো লেগেছে। ভালোভাবে শেষ হয়েছে, এটা আরও ভালো। উপভোগ করেছি।
* কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ভারত, এটা নিশ্চিত হয়েছে আজ। মেলবোর্নের ওই ম্যাচ নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
সাকিব: এখনো ভাবিনি। খুবই রোমাঞ্চকর ম্যাচ হবে আশা করি। ওদের অনেক সমর্থক থাকবে গ্যালারিতে। আমরা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলব, সেটা আমাদের জন্যও রোমাঞ্চকর। সেভাবেই প্রস্তুতি নেব আমরা।
* ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছেন? কারণ, মেলবোর্নে আমরা দেখেছি ভারতীয় সমর্থকেরা কেমন বিরূপ পরিবেশ তৈরি করতে পারে...
সাকিব: সত্যি কথা বললে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। সেটা পূরণ হয়েছে। এখন এটা এক ম্যাচের খেলা। ওই নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। সেটা যেকোনো দল হতে পারে। আমরা তৈরি থাকব।
তথ্যসূত্র: আইসিসি ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.