মনমোহন ন্যায়পরায়ণ মানুষ

কয়লা ব্লক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিংয়ের প্রতি সংহতি জানাতে হেঁটে তার বাসভবনে গেছেন দলীয় সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের শতাধিক নেতা।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আলোচিত কয়লা কেলেংকারি মামলায় মনমোহনকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিবিআই) বিশেষ আদালতে তলবের একদিন পর বৃহস্পতিবার সকালে এ সংহতি পদযাত্রা করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত বুধবার মনমোহনকে তলব করেন। একটি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেয়ায় অভিযুক্ত হিসেবে তাকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার সঙ্গে আরও ডাকা হয়েছে শিল্পপতি কুমার মঙ্গলম বিড়লা, সাবেক কয়লাসচিব পিসি পারেখ ও হিন্ডালকোর তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সংহতি জানানোর উদ্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হন দলের শতাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা। পরে সেখান থেকে তারা সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে মনমোহন সিংয়ের বাড়ির উদ্দেশে পদযাত্রা করেন। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ হেঁটে তারা গন্তব্যে পৌঁছান। মনমোহন ও তার স্ত্রী হাসিমুখে কংগ্রেসের নেতাদের অভিবাদন জানান। সংহতি পদযাত্রা শেষে মনমোহনের বাসভবনের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার সততা ও সরলতার জন্য কেবল ভারত নয়, সারা বিশ্বে পরিচিত। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ। তার প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ও সংহতি জানাতে আমরা এখানে এসেছি। কংগ্রেস দল তার পেছনে পুরোপুরিভাবে আছে। শুধু আইন নয়, অন্য সব উপায়ে আমরা এ ব্যাপারে লড়ব।’
মনমোহন সিং নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলেও দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন সোনিয়া। পরে এনডিটিভিকে মনমোহন সিং বলেন, দলের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে দেখা করতে আসায় তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি অনেক খুশি। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে এই মামলা লড়ব।’ উড়িষ্যার তালাবিড়া-২ কয়লা ব্লক আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান হিন্ডালকোকে দেয়া হয় ২০০৫ সালে। অভিযোগ, এই কাজটি অনিয়মের মাধ্যমে করা হয়। তখন কয়লা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল মনমোহন সিংয়ের নিজের হাতে। টেন্ডার ছাড়া খনি বরাদ্দে সরকারের প্রভূত আর্থিক ক্ষতি হয় বলে মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয় (সিএজি) প্রতিবেদন দেয়। বিষয়টি বিচারাধীন হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্ট সব বণ্টন বাতিল করে দেন। অভিযুক্ত ছয়জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দুর্নীতি দমন আইনের ১২০বি (ষড়যন্ত্র) ও ৪০৯ ধারায় (বিশ্বাসভঙ্গ) মামলা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.