কী দোষ শিশুটির? চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অস্ত্রের ব্যবহার- গুলিতে আহত শিশু

(ছবি:-১ চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় গতকাল সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করেন বাবুল (ডানে) ও রুবেল l ছবি: সংগৃহীত ছবি:-২ বাকলিয়ায় গতকাল দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে পথচারী ইমন হাসান আহত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার এ অবস্থা দেখে মা (বাঁয়ে) ও ভাই কান্নায় ভেঙে পড়েন l ছবি: প্রথম আলো) আন্দরকিল্লা এলাকার একটি ছাপাখানায় কাজ করে ১৩ বছরের শিশু ইমন। গতকাল সোমবার সকালে ছাপাখানায় গেলেও শরীর খারাপ হওয়ায় কাজ না করেই বাড়ির পথে রওনা হয় সে। বাকলিয়ায় নিজ এলাকায় পৌঁছার পর দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে শিশুটি ছররা গুলিতে আহত হয়। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্প্লিন্টারে বিদ্ধ ইমন এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাকলিয়ার আফগান মসজিদ এলাকায় গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী দিদারুল হক ওরফে কিরিচ বাবুল। এ সময় বাবুল দোনলা বন্দুক ও তার সহযোগী রুবেল কিরিচ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করে। তাদের সঙ্গে আরও লোকজন ছিল। অপর পক্ষ জসিম ও আরিফের লোকজন লাঠিসোঁটা ও কিরিচ নিয়ে পাল্টা ধাওয়া দেয় বাবুলদের। এ সময় কয়েকটি গুলি ছোড়া হয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে শিশু ইমন গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন সামান্য আহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্র জানায়, বাবুলকে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল। ৯ অক্টোবর জামিনে ছাড়া পায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, জবরদখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন থানায় ২৪টি মামলা রয়েছে। সংঘর্ষের সময় বাবুলের হাতে থাকা দোনলা বন্দুকটির লাইসেন্স রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন বলেন, ‘লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে এভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি করা যায় না। মানুষকে অস্ত্র নিয়ে হুমকি দেওয়ার কারণে ২০১০ সালে পুলিশ একবার সন্ত্রাসী বাবুলের বন্দুকটি জব্দ করেছিল। পরে তা আদালতের নির্দেশে ফেরত দেওয়া হয়।’
ওসি জানান, দোনলা বন্দুক থেকেও ছররা গুলি বের হয়। তবে শিশুটি কার গুলিতে আহত হয়েছে, সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি। অস্ত্র প্রদর্শন ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাবুল, রুবেলসহ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ওসি জানান। সংঘর্ষের পর বাবুল এবং প্রতিপক্ষ আরিফ ও জসিমের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ইমন যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তার মা আয়েশা বেগম ছেলের পাশে কাঁদছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে ইমনের জ্বর ছিল। সকালে কাজে গেলেও খারাপ লাগায় সে ফিরে আসছিল। আসার সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পড়ে।’ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, শিশুটির সারা গায়ে স্প্লিন্টার রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.