এক মনীষী বিচারপতির বিদায়

বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক অত্যুজ্জ্বল নাম বিচারপতি মোস্তফা কামাল। আইনের জগতের বাইরেও খ্যাতিমান ছিলেন সাবেক এ প্রধান বিচারপতি। তার জ্ঞান, প্রজ্ঞার প্রশংসা হয়েছে সবসময়ই। সেই মনীষী বিচারপতি মোস্তফা কামাল আর নেই (ইন্নালিল্লাহি....রাজিউন)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার দিবাগত রাত ৩টায় রাজধানীর গুলশানে নিজের বাসায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। প্রখ্যাত গায়ক আব্বাস উদ্দিনের ছেলে মোস্তফা কামাল ১৯৯৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি ছিলেন। বিচার বিভাগ পৃথক্‌করণের ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার রায় তিনিই লিখেছিলেন। তার মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছার পর সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে   পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ১ উচ্চ আদালতের গতকালের কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টে দ্বিতীয় জানাযা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মোস্তফা কামালের জন্ম ১৯৩৫ সালের নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায়। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করার পর যুক্তরাজ্যে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি। মাসদার হোসেন মামলার আইনজীবী ও বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য এম আমীর-উল ইসলাম বিচারপতি মোস্তফা কামালের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আমাদের সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তিমান ছাত্র ছিলেন। ছাত্র জীবনে তার অপার স্নেহ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহাস্য সম্ভাষণ পেয়েছি। তিনি ছিলেন উদার চিন্তার মানুষ। আইন জগত ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ে তার যে অবদান, তাতে তিনি অমরত্ব লাভ করবেন। ব্যারিস্টার আমীর বলেন, মোস্তফা কামাল একটি সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্ম নেন, যেখানে তার পিতা মরমী কবি আব্বাস উদ্দিন এখনও আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন। পিতার উত্তরাধিকারে মোস্তফা কামালও ছিলেন সুকণ্ঠের অধিকারী। বেশ কিছু গানও তিনি রপ্ত করেছিলেন বলে আমীর-উল ইসলাম জানান। কিছু কিছু গান আমাদের শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। তিনি যদি শিল্পীও হতেন, তাও তিনি সুনাম কুড়াতেন।

No comments

Powered by Blogger.