রাজধানীতে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ে পুলিশ

প্রকাশ্যে রাজধানীতে পুলিশের হাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। গ্রেপ্তার করে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ওই ব্যবসায়ীর সর্বস্ব লুটে নেয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এক পুলিশ সদস্যসহ দু’জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা। উদ্ধার করা হয়েছে ৭৭ হাজার টাকা। এ ঘটনায় গতকাল দুই পুলিশ সদস্যসহ তিন জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত এক পুলিশ সদস্য পলাতক রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনার শিকার ব্যক্তি জানান, মতিঝিল উত্তরা ব্যাংক থেকে দু’টি ব্যাগে ১ লাখ টাকা নিয়ে বাইসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন তিনি ও তার ভাগ্নে মুহাম্মদ সানি। দুপুর প্রায় ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের সামনে তাদের গতিরোধ করে একটি মোটরসাইকেল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটরসাইকেল আরোহী তিন জন নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে ‘লিটনকে গ্রেপ্তার করা হলো’ জানিয়ে বলে, তোর নামে ছিনতাই মামলা আছে। থানায় চল। এ সময় লিটনের হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাদের দ্রুত মোটরসাইকেলে তোলা হয়। অন্যদিকে সানিকে ঘটনাস্থল আটক রাখে তাদের একজন। লিটনকে মোটরসাইকেলে করে প্রেস ক্লাবের দিকে নিয়ে যেতে চাইলে সে চিৎকার করলে এক বৃদ্ধ লোক ওই মোটরসাইকেলের গতিরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা নিজেদের পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে গুলি করার ভয় দেখায়। তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের লোকজন ও ট্রাফিক পুলিশ এগিয়ে গিয়ে মোটরসাইকেলসহ দু’জনকে আটক করে। পরে তাদের শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। ছিনতাইয়ের শিকার মুহাম্মদ লিটন জানান, তাদের দু’টি ব্যাগের মধ্যে একটি ব্যাগে ৭৭ হাজার, অন্য ব্যাগে ২৩ হাজার টাকা ছিল। এর মধ্যে আটককৃত দু’জনের কাছ থেকে ব্যাগসহ ৭৭ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। বাকি ২৩ হাজার টাকা নিয়ে তাদের সঙ্গী অন্যজন পালিয়েছে। এ ঘটনায় লিটন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, আসামিদের মধ্যে দু’জন পুলিশ সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে যে পালিয়ে গেছে তার নাম মো. খলিলুর রহমান। সে পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পরিদর্শক  (এএসআই)। বর্তমানে ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত রয়েছে। কিছু দিন আগে সে মতিঝিল থানায় কর্মরত ছিল। আটককৃত দু’জনের মধ্যে রয়েছে পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল নম্বর ৫৭৭) নূর-ই-আলম। সে মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নুরুল হক হাওলাদারের পুত্র। অন্যজনের নাম মিজানুর রহমান। সে ফরিদপুর জেলা সদরের নরসিংদিয়া গ্রামের জনু বেপারীর পুত্র। পুলিশের আশঙ্কা তারা আরও বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। এজন্য আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ওসি।

No comments

Powered by Blogger.