স্কুলে তালেবানের হামলায় ৮৪ শিক্ষার্থী সহ ১২৬ জন নিহত

(ছবি:-১ পাকিস্তানের পেশোয়ারে ওয়ারসাক রোডে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তালেবান জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে শিশুশিক্ষার্থীসহ পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে জিম্মি করেছে। ছবি:-২  পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে আজ জঙ্গি হামলার পর দুই স্কুলশিশুকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন এক সেনাসদস্য। ছবি: রয়টার্স) পাকিস্তানের পেশোয়ারে ওয়ারসাক রোডে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তালেবান জঙ্গিদের হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৮৪ শিশুসহ ১২৬ জন নিহত হয়েছে। পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, এখনো বেশ কিছু শিশু তালেবানের জিম্মায় আছে। খবর ডন, রয়টার্স, এএফপি ও এনডিটিভি অনলাইনের। তেহেরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) হামলার দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তালেবানের ঘাঁটি জার্ব-ই-আজবে চলমান সেনা অভিযানের প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। তালেবানের মুখপাত্র মোহাম্মদ খোরাসানি জানান, হামলাকারীরা সংখ্যায় ছয়জন। হামলাকারীদের স্কুলের বড় শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে শিশুদের ওপর গুলি না ছোড়ার কথা বলা হয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপির খবরে জানানো হয়, সামরিক পোশাক পরা পাঁচজন জঙ্গি স্কুলে ঢুকে পড়ে। জঙ্গিরা স্কুলের ভেতরে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে। স্কুলটি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খায়বার-পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে ক্ষমতায় আছে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। ইমরান খান খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুলটি পাকিস্তানের আর্মি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হয়। দেশজুড়ে এমন ১৪৬টি স্কুল আছে। সেনাসদস্য ও বেসামরিক নাগরিকদের সন্তানেরা এখানে পড়াশোনা করে। এখানে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের বয়স ১০-১৮ বছর। স্কুলটির শিক্ষকদের বেশির ভাগ সেনাসদস্যদের স্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জিম্মিদের উদ্ধার অভিযান তদারকি করতে স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া দুইটার দিকে পেশোয়ারের উদ্দেশে রওয়ানা হন। এক বিবৃতিতে তিনি জিম্মি হওয়া শিশুদের নিজের সন্তান হিসেবে উল্লেখ করেন। তাই তিনি তাদের উদ্ধারে চালানো অভিযান নিজেই তদারকি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালের চিকিৎসক শিরফ খান জানান, তাঁদের কাছে তিনজন শিক্ষার্থীর মরদেহ এসে পৌঁছেছে। আহত ৩৫ জনকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে দুজন ওই স্কুলের শিক্ষক। চিকিৎসাধীন দুই চিকিৎসকের বরাত দিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা ইজাজ খান বলেন, অস্ত্রোপচারকক্ষে নেওয়া অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পেশোয়ারের হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। হাসপাতালগুলো ‘ও নেগেটিভ’ রক্ত দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিক্ষক জানিয়েছেন, হামলাকারীরা হামলার জন্য পরীক্ষার সময়কে বেছে নিয়েছে। বেসরকারি একটি টেলিভিশনকে ওই শিক্ষক বলেন, হামলার আধা ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.