নববধূকে রেখে যুদ্ধে

আজাহার কমান্ডার নববধূকে রেখে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। জীবন বাজি রেখে ২৭ বছরের তরুণ যুবক মো. আজাহার আলী খান যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। উচ্ছ্বাসের সঙ্গে তিনি বললেন, যুদ্ধের কথা মনে হলে মনটা ঘরে থাকতে চায় না। মনে হয় যুদ্ধে চলে যাই। তিনি বলেন, দিন তারিখ মনে নেই, ১৯৭১ সালে বিয়ে করেছি। তার দেড় মাস পর আমতলীর বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বেসামরিক প্রশাসন প্রধান মরহুম আফাজ বিশ্বাসের প্রেরণায় ঘরে নতুন বউ রিজিয়া বেগমকে রেখে যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। তখন আমতলীর মুক্তিযোদ্ধা আফাজ বিশ্বাস, হাতেম সুবেদারসহ কয়েকজন আমরা আগাঠাকুরপাড়ায় আশ্রয় নিই। কিন্তু পাকহানাদার বাহিনী আমাদের আশ্রয় নেয়ার কথা শুনে অ্যাটাক করে এবং আমাদের দলের দু’জনকে খবর দিয়ে নিয়ে যায়। ওই জায়গা থেকে কোনরকমে প্রাণে বেঁচে বুকাবুনিয়া থেকে অস্ত্র এনে কলাপাড়ার কাউয়ারচর এলাকায় চলে যাই। সেখানে পাকসেনাদের অ্যাটাক করি। তখন বাধ্য হয়ে ৩৫ জন পাকসেনা প্রচুর অস্ত্র গোলাবারুদ ও ৪টি গানবোটসহ আত্মসমর্পণ করেন। তিনি বলেন, ‘দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা পাই। ঘর দুয়ার নাই, বুড়া হইয়া গেছি, এখনও কাম কইরা খাই। আমার একটা ঘর নাই। ছাপরা দিয়া থাকি। এত বড় বন্যার পর অনেক মানুষে ঘর-দুয়ার পাইছে। আমারে কেউ কিছু দেয়নি।’ আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জি এম দেলোয়ার হোসেন বলেন, আজাহার কমান্ডার একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যেভাবে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলেন তা জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আজাহার কমান্ডার হেরে গেছেন অভাবের কাছে। অভাব নিত্যদিন তাকে তাড়া করছে।

No comments

Powered by Blogger.