‘সামাজিক ব্যবসা মুনাফা অর্জনের বিষয় নয়’ -ড. ইউনূস

সামাজিক ব্যবসা কোন দান-খয়রাতের বিষয় নয়। মুনাফা অর্জনের বিষয়ও নয়। সমাজহিতকর বিষয়। আপনি শুধু এক বছর বিনিয়োগ করলেন। পরে আপনার টাকা আপনি ফেরত পেলেন। এর পরে যে মুনাফা অর্জন হবে তা দিয়ে ব্যবসাটি সমপ্রসারণ হবে। অর্থাৎ সামাজিক ব্যবসা হলো কৈয়ের তেলে কৈ ভাজা। গতকাল চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্র লিমিটেড (সিএসবিসিএল) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চট্টগ্রাম ক্লাবে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় নোবেলজয়ী ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। প্রচলিত ব্যবসার সঙ্গে সামাজিক ব্যবসার পার্থক্য উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, প্রচলিত ব্যবসা হলো ব্যক্তি হিতকর আর সামাজিক ব্যবসা হলো সমাজহিতকর। প্রচলিত ব্যবসায় ব্যক্তির মুনাফা অর্জনের বিষয় থাকে। সামাজিক ব্যবসায় মুনাফা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে সামাজিক ব্যবসা কোন এনজিও কার্যক্রমও নয়। এটি অবশ্যই ব্যবসায়িক কোম্পানি হতে হবে। এর একজন মালিকও থাকতে হবে। সামাজিক ব্যবসা কোন স্থানীয় বিষয় নয়। এটি বিশ্বমাপের জিনিস। তিনি বলেন, ‘সামাজিক ব্যবসার পেছনে দু’টো জিনিস বড় জরুরি। একটা হচ্ছে সৃষ্টিশীলতা। মাথার মধ্যে এমন একটা পোকা থাকতে হবে। প্রথমে মনে হবে অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু পোকার কারণে তা সম্ভব হয়ে যায়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে সমস্যার সমাধান দিবে। তবে এটা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে হতে হবে।’ নবীন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য করে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চাকরি করার বিষয়টি তোমাদের মন থেকে মুছে ফেলতে হবে। তোমরা ব্যবসায়ী হবে, অন্যকে চাকরি দেবে। সহযোগিতার জন্য তোমাদের যা লাগে সব দেবো। সামাজিক ব্যবসা আগে থেকে ছিল উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সামাজিক ব্যবসা আমি যে আবিষ্কার করছি তা নয়, আমি তার রূপরেখা দিয়েছি। সামাজিক ব্যবসা হতে হলে কোম্পানি হতে হবে। কোন রেজিস্ট্রার্ড এনজিও’র কার্যক্রম সামাজিক ব্যবসা হতে পারে না। সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মালিক থাকতে হবে। এ সময় তিনি সামাজিক ব্যবসা নিয়ে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে দেশে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে চক্ষু হাসপাতাল, ব্রিজ, পানি, নার্সদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরেন। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি ড. সিকান্দর খানের সভাপতিতে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ফারুক-ই আজম বীরপ্রতীক, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, চট্টগ্রাম ক্লাবের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম  সোশাল বিজনেস সেন্টার লিমিটেডের পরিচালক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.