‘সরকার বীভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে’ -খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার এখন শেষ মরণকামড় দেয়ার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ ক্ষমতা জবরদখলকারী এই অবৈধ সরকার কোনভাবেই জনগণকে কাছে টানতে না পেরে বীভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে। সেই প্রতিহিংসার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটলো বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও গতকাল রাতে গ্রেপ্তারের উদ্দেশে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিকে এই অবৈধ সরকারের দুর্বৃত্তায়িত চরিত্রেরই পুনরাবৃত্তি বলে তিনি  উল্লেখ করেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আটকের পর শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, এই অবৈধ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় সংসদ দখল করে, জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে মনে করেছিল চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতার রাজদন্ড ধরে রাখবে। আর এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নিজেদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত করে তাদেরকে সর্বনাশা আশকারা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দমনে ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিরোধী দলকে পর্যদুস্তু করার জন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অবৈধ আওয়ামী সরকারের প্রিয়জনদের দিয়ে সাজিয়ে সবধরনের হিংসাত্মক অপতৎপরতা চলমান রাখা হয়েছে। আর সেজন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা আর নির্বিচারে গ্রেপ্তার করতে এই অবৈধ আওয়ামী সরকারের জনপ্রশাসন অত্যন্ত পারঙ্গম। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জনগণকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না। তিনি বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন ভয়াবহ সংকটের মুখে। সাজানো প্রশাসন ও দুষ্কৃতিকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের পান্ডাদের দিয়েই এই ভোটারবিহীন সরকার গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যার পথ ধরে জনগণের প্রতিবাদী স্বরকে থামাতে অপচেষ্টা করা, বিরুদ্ধ মত-পেশার কোন জায়গা না রাখা এবং রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর অত্যাচার ও জুলুম অব্যাহত রেখেছে। আর এভাবে নিজেদের মসনদ গায়ের জোরে ধরে রাখতে তারা মূলত দেশের জনগণকেই পরাধীন করে রেখেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, গত ২৪শে ডিসেম্বর আমার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র পান্ডারা যেভাবে পৈশাচিক হামলা করে তাতে মনে হয় এই অবৈধ সরকার এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে তারা মূলত জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। সব দেখে শুনে মনে হয় এই সন্ত্রাসী দুঃশাসনের প্রধান মুখপাত্র হচ্ছেন স্বয়ং বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান। তার কাছে অহম ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, একদলীয় অপশাসনের শৃঙ্খলে গোটা দেশকেই বন্দীশালায় পরিণত করা হয়েছে। উদ্বেল মিছিলে মিছিলে সংগ্রামী জনগণ এখন শৃঙ্খল ভেঙে এই অবৈধ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাবিলাসের যবনিকাপাত ঘটাতে ধেয়ে আসছে। বিএনপি চেয়ারপারসন অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত আক্রমণের ঘটনায় জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন খালেদা
পাল্টাপাল্টি জনসভাকে ঘিরে প্রশাসন গাজীপুর জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করায় দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাত ৮টায় গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ মানবজমিনকে এ তথ্য জানান।

No comments

Powered by Blogger.