দেশে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র চলছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। তারা গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টিয়ে ফেলেছে। তারা যে গণতন্ত্র বোঝে তা হচ্ছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া। একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে, তারাই ক্ষমতা ভোগ করবে। তারা যে গণতন্ত্রের কথা প্রচার করছে, তা রেজিমেন্টেড গণতন্ত্র অর্থাৎ নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র। মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক ফোরাম আয়োজিত উন্নয়নের পূর্বশর্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন হলেই গণতন্ত্র হয় না। অনেক দেশে নির্বাচিত সরকার আছে কিন্তু তারা গণতান্ত্রিক নয়। আওয়ামী লীগ তাদের নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের স্বপক্ষে কিছু উদাহরণও দেয়। তারা বলে মালয়েশিয়া নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের জন্যই আজ উন্নত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ নিয়ন্ত্রিত নয়, উন্মুক্ত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা কোনো চাপিয়ে দেয়া গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র নয়, মুক্ত গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে, দেশ স্বাধীন করেছে। ফখরুল বলেন, সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা (সরকার) সামন্ততান্ত্রিক রাজা-বাদশা-প্রভু। ঢাকা শহরে প্রখ্যাত সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ শহরে কোনো ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই। নয়াপল্টন থেকে প্রেস ক্লাবে আসার পথে দেখলাম তোপখানার কাছে ব্যাপক যানজট। পুলিশ, ট্রাফিক কেউ নেই। হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ দিচ্ছে। তাহলে কোথায় তারা? এই পুলিশ বাহিনীকে বিরোধী দল দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে দেশে আজ কোনো জবাবদিহিতা নেই। পুলিশ দুর্নীতি ও লুটপাটে ব্যস্ত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করে বিএনপি দেশে সামরিক শাসন আনতে চেয়েছিল- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এ বক্তব্য মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। এটা সত্যের অপ্রলাপ মাত্র। বিএনপি কখনোই সামরিক শাসনে বিশ্বাস করে না। দেশে যতবার সামরিক শাসন এসেছে সব কটির পেছনে ছিল আওয়ামী লীগ। সবশেষ ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেই আওয়ামী লীগ মঈনুদ্দিনকে ডেকে এনেছিল। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এইচএম হারিছুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নবী উল্লাহ নবী, নরসিংদীর উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক ফোরামের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সৈয়দ আশরাফ জাতির মুখে কালিমা লেপন করেছেন- শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালকে দুই পয়সার মন্ত্রী বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সমগ্র জাতির মুখে কালিমা লেপন করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি সন্দিহান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সৈয়দ নজরুল ইসলামের ঔরসজাত সন্তান কিনা। কারণ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন অত্যন্ত সৎ, ভদ্র, বিদ্যান একজন লোক। তিনি অধ্যাপক ছিলেন। ছিলেন অ্যাডভোকেট। তাকে সবাই সম্মান করত। এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে স্যার বলে ডাকতেন। তার ছেলে হয়ে সৈয়দ আশরাফ যেভাবে কথা বলছেন তাতে আমি সন্দিহান তিনি নজরুল ইসলামের ছেলে কিনা। তিনি বলেন, নিশা দেশাই মন্ত্রী হোন অথবা না হোন। আমেরিকার একজন সাধারণ নাগরিক হলেও কি তার সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ এভাবে বলতে পারেন। ন্যূনতম ভদ্রতা বলে কিছু থাকবে না? স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো অবদান নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.